Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

পর্যটনে ‘হোম স্টে’, আশ্বাস বিরবাহার

বেলপাহাড়ি রুক্ষ পাহাড়ি এলাকা। এখানে বৃষ্টি ছাড়া চাষ হয় না। যতটুকু ফসল ফলে তার সিংহভাগই খেয়ে নেয় ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা হাতির দল। জঙ্গলের কাঠ, শালপাতা, কেন্দু পাতা সংগ্রহ করে কোনও মতে কাটে জনজাতি বাসিন্দাদের।

 বেলপাহাড়িতে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিরবাহা। নিজস্ব চিত্র

বেলপাহাড়িতে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিরবাহা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

গত বছর ঝাড়গ্রাম সফরে এসে বেলপাহাড়িতে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন সরকারি সহযোগিতায় মুলবাসীদের বাড়িতে ১০০টি হোম স্টে তৈরি করে দেওয়া হবে। বেলপাহাড়ির পাহাড়ি এলাকায় প্রচারে গিয়ে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রকৃতি বেলপাহাড়িকে সাজিয়ে দিয়েছে। এখানে বেশি সংখ্যায় পর্যটকরা এলে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যটন প্রসারে আগেই পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন। আমি প্রচারে গিয়ে মানুষকে জানাচ্ছি, আমরা প্রতিশ্রুতি পালন করব।’’

বেলপাহাড়ি রুক্ষ পাহাড়ি এলাকা। এখানে বৃষ্টি ছাড়া চাষ হয় না। যতটুকু ফসল ফলে তার সিংহভাগই খেয়ে নেয় ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা হাতির দল। জঙ্গলের কাঠ, শালপাতা, কেন্দু পাতা সংগ্রহ করে কোনও মতে কাটে জনজাতি বাসিন্দাদের। ভিন জেলায় খেতমজুরের কাজ অথবা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেও যান তাঁরা। তৃণমূলের অন্দরের খবর, বেলপাহাড়ি ব্লকের ভুলাভেদা, শিমূলপাল ও বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচারে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের। ওই পঞ্চায়েতগুলির ক্ষমতায় রয়েছে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। যদিও এখন সেই মঞ্চের অন্দরেই বিভাজন দেখা দিয়েছে। ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে এ বার আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ প্রার্থী দিয়েছে। মঞ্চ থেকে বেরিয়ে এসে আলাদা প্রার্থী দিয়েছে ভূমিজ ও মুণ্ডা সমাজ।

বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে কাজের অভাবকেই হাতিয়ার করেছেন। কুনারের কথায়, ‘‘গরিব মানুষের কাজের ব্যবস্থা হয়নি বলেই তাঁরা ভিন রাজ্যে মজুর খাটতে যান। তাঁরা ১০০ দিনের কাজও যথাযথ পান না।’’ জিতলে বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত এলাকায় কাজের সুযোগ বাড়ানোর আশ্বাস দিচ্ছেন কুনার। সিপিএম প্রার্থী দেবলানী হেমব্রম এবং কংগ্রেসের যজ্ঞেশ্বর হেমব্রমও বেলপাহাড়ির পাহাড়ি এলাকায় গরিব মানুষের কাজের সুযোগ না থাকার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। যজ্ঞেশ্বর বলছেন, ‘‘এলাকায় কোনও শিল্প নেই। পর্যটন শিল্পের প্রসারেও কেন্দ্র ও রাজ্য কোনও সরকারই পদক্ষেপ করেনি। বিরোধীদের এমন প্রচারের জবাবে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বেলপাহাড়ির পাহাড়ি এলাকার তিনটি পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এসেছে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। তারা ১০০ দিনের কাজ ঠিকভাবে রূপায়িত করতে পারছে না বলে সমস্যা আরও বাড়ছে।

শিমূলপাল অঞ্চলের বুড়িঝোর গ্রামের আদিবাসী ভূমিজ সম্প্রদায়ের প্রবীণ কালীপদ সিংহ, নলিনী সিংহ-রা বলেন, ‘‘এলাকায় রাস্তাঘাট হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। কিন্তু এলাকায় কাজের বড় অভাব। সেই জন্য ধান কাটতে অন্য জেলায় যেতে হয়। গ্রামের যুবকেরা শ্রমিকের কাজ করতে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের মতো ভিন রাজ্যে যায়।’’ বিরবাহা অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, ‘‘পর্যটনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর সারা বছর কাজের ব্যবস্থা করার জন্য সব রকম ভাবে চেষ্টা করব। সারা বছর মানুষ আমাকে পাশে পাবেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy