ক্ষীরাইয়ে ফুলের বাগানে পর্যটকদের ভিড়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার এক কলেজের মেধাবী ছাত্র স্বাগত বণিকের দেহ গত সোমবার রাতে পাওয়া গিয়েছিল পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই স্টেশনে। তৈরি হয়েছিল রহস্য। ওই ছাত্রের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায়। সেখান থেকে হঠাৎ কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ তিনি ক্ষীরাইয়ে কেন যাবেন, সেই প্রশ্ন সকলেরই মনে উঠেছিল।
তবে, ক্ষীরাইয়ের স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ওই এলাকা ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। বিগত কয়েক বছর ধরে ফুলের টানে প্রচুর পর্যটক সমাগম হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ও ব্লগারেরা ভিড় করছেন। পাশাপাশি ক্ষীরাই এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ। স্বাগত বণিকের রহস্যমৃত্যুর মধ্যে ক্ষীরাই এলাকায় দুষ্কৃতীদের যোগ থাকতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
স্বাগত বাড়ি থেকে শেষ বারের মতো বেরিয়েছিলেন গত রবিবার। সেটি ছিল ছুটির দিন। হতে পারে বাড়িতে না জানিয়েই তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ক্ষীরাই ঘুরতে গিয়েছিলেন। তার পর সেখানে এমন কিছু ঘটে যার জন্য তিনি মালগাড়ির নীচে চাপা পড়েন। রেল, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের দাবি করেছেন স্থানীয়েরা।
বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ক্ষীরাই স্টেশন সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুলের চাষ হয়। বছর পাঁচেক আগে ক্ষীরাই-সংলগ্ন দোকান্ডার ফুল বাগিচার ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তার পর থেকে প্রতি বছর শীতের মরসুমে দোকান্ডায় পর্যটকের ভিড় উপচে পড়ে। দোকান্ডায় কংসাবতী নদীর চরে একটি ফুলের মেলা বসে। সেখানে ভিন রাজ্য, এমনকি ভিন দেশ থেকেও আসেন পর্যটকেরা। ক্ষীরাই স্টেশনে নেমে রেললাইন বরাবর দেড় কিলোমিটার পথ হাঁটলেই দোকান্ডায় পৌঁছনো যায়। শীতের মরসুমে ওই রাস্তায় টোটো চলে। স্বাগত কি কোনও ভাবে ক্ষীরাই স্টেশনে নেমে দোকান্ডায় যেতে চেয়েছিলেন? সেখানে কি তিনি দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েন? এই সব প্রশ্ন ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে।
স্থানীয়েরা জানান, সূর্য ডোবার পর ক্ষীরাই স্টেশন সংলগ্ন এলাকাটি দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায়। রাস্তায় বসে গাঁজা, মদের আসর। অভিযোগ, রাতে ক্ষীরাই খালের দুই পাশের বাঁধের উপর যৌন ব্যবসাও চলে। ভুল করে পর্যটক সন্ধ্যা বা রাতের ওই এলাকায় ঢুকে পড়লে ছিনতাইকারীদের হাতে পড়তে পারেন বা নানা ভাবে হয়রানির শিকার হতে পারেন।
গত বছর শীতকালে ফুলের মরসুমে ক্ষীরাই স্টেশন লাগোয়া একটি জায়গায় এক যুগলের থেকে মোবাইল, টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তাদে দৌরাত্ম্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, স্থানীয় মানুষ সন্ধ্যায় ক্ষীরাই বাঁধের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেত ভয় পান।
ক্ষীরাই এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বন্ধে রেল এবং স্থানীয় থানাকে আরও সক্রিয় হতে অনুরোধ করেছে সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন,"ক্ষীরাই এলাকায় দিনকে দিন দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়ে চলছে। মানুষ ভয়ে রয়েছে।’’
পাঁশকুড়া জিআরপি থানার ওসি সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি,"ক্ষীরাই স্টেশনে আমাদের নিয়মিত টহলদারি চলে। এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম।’’ পাঁশকুড়া থানার এক আধিকারিকের কথায়,"রেল স্টেশন এলাকায় সুরক্ষার দায়িত্ব জিআরপি-র। আমাদের তরফে স্টেশনের বাইরের এলাকায় নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy