গন্তব্যে: ইভিএম নিয়ে বুথের পথে ভোটকর্মীরা। ঝাপেটাপুরে। নিজস্ব চিত্র
প্রচার শেষ। অথচ শহর জুড়ে অপরিচিত মুখ।
কখনও শহরের বাসিন্দা কোনও যুব নেতার বাইকের পিছনে যাচ্ছেন বহিরাগত যুবক। আবার কখনও রেল বাংলো থেকে বেরিয়ে আসছেন জনা দু’য়েক বহিরাগত। বহিরাগত নিয়ে বিরোধী-শাসক তরজায় সরগরম ভোটের রেলশহর। উপ-নির্বাচনের ২৪ ঘন্টা আগে শহরে বহিরাগতদের আনাগোনা ভয়ে রাখছে খড়্গপুরবাসীকেও। মনে ঘুরছে প্রশ্ন, আজ ভোটের দিনটা নির্বিঘ্নে কাটবে তো?
রবিবার খড়্গপুর সদর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের আগের দিনেও রাজনৈতিক দলগুলি ব্যস্ত ছিল বহিরাগত তরজায়। ২০১৬ সালে এখান থেকে জিতেই বিধায়ক হন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এখনও মেদিনীপুরের সাংসদের নির্বাচনী এলাকার মধ্যেই পড়ে রেলশহরের বিধানসভা।
কিন্তু উপ-নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে দিলীপকে বহিরাগত বলে বিঁধে ভোটের সময় তাঁর শহরে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি রবিবার বলেন, “বহিরাগত দিলীপ ঘোষকে খড়্গপুর শহর থেকে বের করার দাবিতে পর্যবেক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করছে। আর এই খড়্গপুর শহর দিলীপ ঘোষের পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’’ এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের ব্যাখ্যা, মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ খড়্গপুরের ভোটার না হওয়ায় তিনি ভোটে থাকতে পারেন না।
বিজেপির পাল্টা দাবি, শহর জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তৃণমূলের বহিরাগতরা। এমনকি তৃণমূলের বহিরাগত নেতা শহরের বাইরের বাসিন্দা ৫৪ জন ওয়ার্ড পর্যবেক্ষকও এ দিন শহরে ঘুরে বেরিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য জোনাল আহ্বায়ক তুষার মুখোপাধ্যায় বলছেন, “সাংসদ হিসাবে দিলীপদা শহরে নিজের রেল বাংলোয় রয়েছেন। তৃণমূল আগে নিজেদের বহিরাগত দুষ্কৃতীদের শহর থেকে বের করুক।” তুষারের দাবি, ‘‘ভোটের দিন তৃণমূলের ওই বহিরাগতরা অশান্তির চেষ্টা করলে দিলীপদা বাংলো থেকে মাঠে নেমে রুখে দাঁড়াবেন।’’
এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়া নিয়ে ভয়ে সাধারণ ভোটাররা। প্রতিবার নির্বাচনের আগে-পরে বহিরাগত দাপট দেখেছে শহরবাসী। উপ-নির্বাচনের আগে সেই বহিরাগতরা ফের শহরে ঘুরে বেড়ানোয় অশান্তির আশঙ্কা বাড়ছে। সাঁজোয়ালের বাসিন্দা রেলকর্মী কৃশানু আচার্য বলেন, “শহর জুড়ে অপরিচিত মুখের ভিড়। বিভিন্ন এলাকায় তাদের জটলা। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারব কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি।’’
বিরোধী প্রার্থীদের দাবি, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করায় অশান্তির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ভোটে ছাপ্পার আশঙ্কাও করছেন। রাজনৈতিক দলের কর্মীর কথায়, “হলদিয়ার ধাঁচে ভোট হবে শুনছি। এ ক্ষেত্রে বিকেল ৪টের পরে বুথ জ্যামের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময়ে বাইরে থেকে লোক এসে যা করার করবে।” তৃণমূলের ভোট যাতে এ দিক-ও দিক না হয় সে জন্য শহরের তিন তৃণমূল নেতাকে নজরবন্দি করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।
তবে তৃণমূল প্রার্থী বলছেন, শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। প্রশাসনেরও দাবি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে তারা প্রস্তুত। খড়্গপুরের নির্বাচনী আধিকারিক বৈভব চৌধুরী বলেন, “যাঁরা শহরের ভোটার নয় তাঁদের বের করা হয়েছে। হোটেলগুলিতে নজরদারি চলছে। বহিরাগত নেই। অভিযোগ পেলে দেখব।’’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদেরও বক্তব্য, “নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে। বহিরাগতদের বের করা হয়েছে। নাকা চলছে। ভোট শান্তিপূর্ণই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy