থিম: বাহুবলী থিমে মণ্ডপ গড়া হয়েছে তমলুকের যশোড়া বাজারের একটি সর্বজনীন কালীপুজো মণ্ডপ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
কোথাও মণ্ডপসজ্জায় হাতি, ঘোড়া আর পাল্কির বাহিনী। কোথাও দেবীর গায়ে সোনার গয়নার সাজ। কোথাও দেবীর বিশালাকার প্রতিমা। তমলুক শহরে এমনই সব থিম নিয়ে সেজে উঠছে কালীপুজো।
শক্তি আরাধানার পীঠস্থান প্রাচীন শহর তাম্রলিপ্তের ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রত্যেক বছর বেশ জাঁকজমক করেই হয় কালীপুজো। প্রতি বারের মতো এ বারও বড় বাজেটের পুজোর আয়োজকেরা একে অপরকে টেক্কা দিতে মণ্ডপ ও প্রতিমায় নানা রকমের চমক দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যেমন, তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে হলদিয়া-মেচেদা সড়কের ধারে ফাইভ স্টার ক্লাবের পুজোর থিম ‘গমন’। প্রাচীন কালে যাতায়াতের অন্যতম ভরসা হাতি, ঘোড়া, পাল্কির মতো বাহনকে তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে। এই পুজো এ বার ৪৩ বছরে পা দিল। ক্লাব সভাপতি তথা তৃণমূল কাউন্সিলর চঞ্চল খাঁড়া বলেন, “যাতায়াতের এই সব প্রাচীন মাধ্যমগুলি আজকের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই মণ্ডপসজ্জার থিমে এগুলিকে রাখা হয়েছে।” বিশালাকৃতি পুজোমণ্ডপ জুড়ে থাকছে সুসজ্জিত হাতি, ঘোড়ার ও পাল্কির মডেল। সিন্থেটিক ফাইবার, রবার শিট, কাপড় দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপটি। এই পরিবেশের সঙ্গে মানানসই করেই তৈরি হয়েছে প্রতিমা। মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমা নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা। পুজার অন্যতম আকর্ষণ টলিউডের তারকা অঙ্কুশ ও রুক্মিনী, সঙ্গীতশিল্পী জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও ঊষা উত্থুপ। পুজার বাজেট প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা।
এই এলাকার কাছাকাছিই ‘বিদ্রোহী সঙ্ঘ’-এর পুজা এ বার পা দিয়েছে ২৯ বছরে। মণ্ডপের থিমে তুলে ধরা হয়েছে ‘স্বচ্ছ বাংলা’। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে সাফাইয়ের ঝাড়ু, ব্রাশের মতো সামগ্রী। পরিবেশ সচেতনতা ও স্বচ্ছতার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের দেবী মূর্তি আদলে ৩২ ফুট প্রতিমা। বাজেট প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। ক্লাবের সহ-সভাপতি শওকত মল্লিক বলেন, “স্বচ্ছ বাংলা গড়ে তুলতে সকলের সচেতনতা ও সাহায্য জরুরি। এই বার্তা পৌঁছে দিতেই মণ্ডপসজ্জার থিমে তা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি, বিশালাকার প্রতিমা দেখতে দর্শকদের ভিড় জমবে।”
শহরের বাদামতলায় উত্তরায়ণ ক্লাবের মণ্ডপের থিমে তুলে ধরা হয়েছে দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের আদলে। পরিখা-ঘেরা মণ্ডপের সামনে থাকছে একটি ওয়াচ টাওয়ার। ফাইবারের তৈরি কারুকাজ করা নানা মডেল দিয়ে সাজানো মন্দিরে থাকছে দক্ষিণাকালীর রূপের দেবীপ্রতিমা। প্রতিমার গায়ে থাকছে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না। ক্লাবের পুজো কমিটির কার্যকরী সভাপতি শঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পুজোয় এ বারই প্রথম প্রতিমার সাজে সোনার গয়না ব্যবহার করা হচ্ছে।”
বাদামতলার কাছে স্টেডিয়াম গেটে কিশোর সঙ্ঘের পুজোর মণ্ডপসজ্জা করা হচ্ছে বিশাল জাহাজের আদলে। জাহাজের উপরে থাকবে ছোট ছোট উদ্ধারকারী নৌকা। সমুদ্রে জাহাজ বিপদে পড়লে কী ভাবে নৌকা চেপে উদ্ধার হয়, তা ধরা দেখানো হয়েছে। ৬০ ফুট উঁচু এবং ৮৫ ফুট চওড়া এই মণ্ডপের ভিতর থাকছে কাচ দিয়ে তৈরি নানা কারুকাজ। মণ্ডপের সামনে থাকবে সজানো বাগান। পুজার বাজেট প্রায় ৯ লক্ষ টাকা।
শহরের এই সব বড় বাজেটের পুজোগুলোর সঙ্গে আরও বেশ কিছু এলাকায় জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। কালীপুজোর জাঁকজমকে জন্য এ ভাবেই সেজে উঠছে তমলুক শহর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy