দলের নেতৃত্বদের সামনেই মারামারি। নিজস্ব চিত্র
বেশ কিছুদিন ধরেই চন্দ্রকোনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। এবার দলের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচির প্রস্তুতি সভায় জেলার শীর্ষ নেতাদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। জেলা নেতাদের সামনেই চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষকে মারধর করে সভা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই গোলমাল থামাতে আসতে হয় পুলিশকে। গোলমালের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ওই প্রস্তুতি সভা।
চন্দ্রকোনায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াই নতুন ঘটনা নয়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, কার্যত দলের জন্মলগ্ন থেকেই এখানে দু’টি গোষ্ঠী সক্রিয়। ইদানিং সেই কোন্দল প্রকট হয়ে উঠেছিল। এখন চন্দ্রকোনায় দলের সামগ্রিক রাশ বিধায়ক অরূপ ধাড়ার দখলে। চন্দ্রকোনা-২ ব্লক সভাপতি প্রসূন ঘোষ ও শহর সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা অরূপ ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। অন্যদিকে চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ অরূপ গোষ্ঠীর বিরোধী বলে পরিচিত। হীরালালের সঙ্গে রয়েছেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জগজিৎ সরকার।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই দলের আভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে হীরালাল সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এক সময়ে দলের জেলা নেতা, পুলিশের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। দিন কয়েকদিন ধরেই বুথ সভাপতি পরিবর্তন করা নিয়ে হীরালাল গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল। রাতারাতি বুথ সভাপতি বদল কেন করা হল ও ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে ভোটার তালিকা তৈরি নিয়েও সরব হয় ওই গোষ্ঠী। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার চন্দ্রকোনা-২ ব্লক কমিটির প্রস্তুতি সভা ছিল চন্দ্রকোনা শহরের টাউন হলে। বৈঠক শুরু হতেই হীরালাল, জগজিৎ-সহ তাঁদের অনুগামীরা টাউন হলে এসে জড়ো হন। দলের জেলা নেতাদের ঘিরে ক্ষোভের কথা জানান তাঁরা। এই টানাপড়েনের মধ্যেই সভা শুরু হয়ে যায়। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন দলের ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত, চেয়ারম্যান অমল পান্ডা, জেলা যুব সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, সহ সভাপতি শঙ্কর দোলই, দলের জেলা নেতা বিকাশ ভুঁইয়া, কৌশিক কুলভীরা।
তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, আচমকাই হীরালাল চন্দ্রকোনায় ব্লক নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তা নিয়ে বচসা শুরু হয়। একসময়ে সভায় উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের একাংশ হীরালালের উপর চড়াও হন। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁকে মারধর করা হয়। তারপরে কার্যত ধাক্কা দিয়ে টাউন হল থেকে বের করে দেওয়া হয় ওই নেতাকে। এই খবর নাকি অভিষেকের দফতরেও পৌঁছেছে। রাজ্য স্তরে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবরও শুরু হয়েছে। হীরালাল বলছেন, “আমি দলের জন্মলগ্ন থেকে আছি। দলকে ভালবাসি। দলের স্বার্থেই প্রতিবাদ করেছি। তার জন্য জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে আমাকে মারধরের ঘটনা কর্মীরা মেনে নেবে না।”
তৃণমূলের ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “এটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। শুক্রবার চন্দ্রকোনায় একটা ঘটনা ঘটেছে। দলীয় ভাবে তার পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy