Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
চাপা থাকছে না তৃণমূলের কোন্দল
TMC

শ্রমিকদের হাতে হেনস্থায় হল না নালিশ

কোন্দল রুখতে দলীয় নেতৃত্ব হাজারো চেষ্টা করলেও রবিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে মুছে ফেলা যায়নি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া ও তমলুক শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩৫
Share: Save:

দলের শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে রাজ্যে নেত্রীর উপস্থিতিতে হয়েছে বিক্ষোভ। উঠেছে দলীয় নেতাকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ। কিন্তু হলদিয়ার ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও থানায় দায়ের হল না কোনও লিখিত অভিযোগ। যা দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা— ভোটের আগে এভাবে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামনে আনতে চান না তৃণমূল নেতৃত্ব।

অবশ্য কোন্দল রুখতে দলীয় নেতৃত্ব হাজারো চেষ্টা করলেও রবিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে মুছে ফেলা যায়নি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি। সেখানে ব্লক সভাপতির ডাকা বৈঠকে গরহাজির থাকলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতৃত্ব।

শনিবার হলদিয়া বন্দরের অতিথি নিবাসে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আসেন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দোলার গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে অতিথি নিবাসে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল শ্রমিক। বন্দরের শ্রমিক নেতা তথা হলদিয়া পুরসভার পুরপ্রধান শ্যামল আদকের সামনেই ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন শ্রমিকরা। শ্রমিক নেতাদের নাম ধরে ‘দূর হঠো’ বলে চিৎকার করেন তাঁরা। ওই সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আইএনটিটিইউসি’র প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকারকে বেধড়ক মারধোর করা হয় বলে অভিযোগ।

ওই ঘটনার পরেও সংবাদমাধ্যমের সামনে যেমন প্রকাশ্যে কোনও নেতা মুখ খোলেননি। তেমনই ঘচনায় থানাতেও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, হলদিয়ায় শ্রমিকদের উপরে নির্বাচনের ভাগ্য বেশ কিছুটা নির্ভরশীল। ২০১৬ সালে শ্রমিকেরা বামেদের সমর্থন করেছিল। তাই ওই বিধানসভা নির্বাচনে হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ভরাডুবি ঘটে। সেই জন্যই হয়তো আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সচেতন তৃণমূল। তাই শ্রমিকদের আবেগকে তারা আঘাত করতে চাইছে না। কোন্দলও সামনে আনতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে শিবনাথ অবশ্য বলছেন, ‘‘অভিযোগ জানানোর মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাই অভিযোগ জানানো হয়নি।’’

অন্যদিকে, ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা উপলক্ষে জেলার প্রতিটি ব্লকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই জনসভার আগে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে রবিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল সভাপতি শরৎ মেট্যা একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকেও সামনে এসেছে কোন্দল।

এ দিন বিকেলে নোনাকুড়ি বাজারের নজরুল মঞ্চে আয়োজিত সভায় ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ, সদস্য, দলের অঞ্চল ও ব্লক নেতাদের সভায় ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে দলের দুই ব্লক সহ-সভাপতি বিভাস কর, রাজেশ হাজরা, সাসপেনশান প্রত্যাহার করে তৃণমূলে ফেরানো পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের অধিকাংশই সভায় হাজির হননি। এছাড়া, শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মনও সভায় যাননি। এর ফলে এদিনের সভা ঘিরে ব্লক তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এসেছে। অস্বস্তিতে দলীয় নেতৃত্ব।

তবে এ দিনের সভায় গিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন মাইতি ও আইএনটিটি ইউসির জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু রায়। ব্লক সভাপতি শরৎ মেট্যার সঙ্গে দিবাকরের কোন্দল বহু দিনের। এ দিন শরৎ বলেন, ‘‘ ব্লক সভাপতি হিসেবে দলের সব পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য, দলের সব অঞ্চল ও ব্লক নেতৃত্বদের সভায় ডেকেছিলাম। দিবাকরকেও ডাকা হয়েছিল। উনি আসেননি। শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসাবে পরিচিত ব্লক নেতাদের কয়েকজনও হাজির হননি। সভায় সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি রঘুনাথপুর-২ অঞ্চল বাদে ব্লকের ন’টি অঞ্চলে দলের সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Haldia Inner conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy