Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

শহর দাপাচ্ছে দু’হাজার টোটো, চোখ বুজে প্রশাসন

রেজিস্ট্রেশন রয়েছে ৩১১টির, অথচ মেদিনীপুর শহরে বর্তমানে চলছে দু’হাজারেরও বেশি টোটো। লাগামছাড়া অবৈধ টোটোর দাপটে মাথায় হাত রেজিস্ট্রেশন রয়েছে এমন টোটো ও অটো চালকদের। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরাও।

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

রেজিস্ট্রেশন রয়েছে ৩১১টির, অথচ মেদিনীপুর শহরে বর্তমানে চলছে দু’হাজারেরও বেশি টোটো। লাগামছাড়া অবৈধ টোটোর দাপটে মাথায় হাত রেজিস্ট্রেশন রয়েছে এমন টোটো ও অটো চালকদের। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরাও।

‘পশ্চিম মেদিনীপুর প্রোগ্রেসিভ মিউনিসিপ্যালিটি ই-রিকশা ইউনিয়ন’-এর সভাপতি স্নেহাশিস ভৌমিক বলছেন, ‘‘মেদিনীপুর শহরে দু’ হাজারের বেশি অবৈধ টোটো চলছে। ফলে রেজিস্ট্রেশন করা টোটোগুলির আয় কমছে।’’ তিনি বলছেন, ‘‘গত ১০ জানুয়ারি বৈঠক করে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, ২৬ জানুয়ারির পর অবৈধ টোটো রুখতে অভিযান চালানো হবে। যদিও কোনও কাজ হয়নি।’’ স্নেহাশিসবাবুর অভিযোগ, ‘‘অবৈধ টোটোর চালকেরা কোনও নিয়ম মানে না। নিয়ম অনুযায়ী গাড়ির মালিকেরই টোটো চালানো উচিত। যদিও বাচ্চাদের দিয়ে টোটো চালানো হচ্ছে। নজর নেই প্রশাসনের।’’

আগে জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে যাতায়াতের মাধ্যম ছিল অটো ও রিকশা। বছর কয়েক আগে পথে নামে টোটো। প্রথম দিকে সমস্যা না হলেও রুট বিভাজন নিয়ে অটো-টোটোর গোলমালে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়েছে শহর। তারপরেই দৌরাত্ম্য রুখতে ৩১১টি টোটোর রেজিস্ট্রেশন করে পরিবহণ দফতর। সেই সময় ঠিক হয়েছিল, শহরের চারটি ওয়ার্ডে টোটো চালানো যাবে। যদিও তারপর থেকে লাফিয়ে বেড়েছে টোটোর সংখ্যা। নিয়ম না মেনে শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তায় টোটো দাপিয়ে বে়ড়াচ্ছে। নির্দিষ্ট তালিকা না থাকায় টোটো চালকেরা যাত্রীদের থেকে যেমন খুশি ভাড়া চাইছে বলেও অভিযোগ। টোটোর দাপটে শহরের প্রধান রাস্তাগুলিতে ব্যস্ত সময়ে যানজটও নিত্যদিনের ঘটনা।

পাটনাবাজারের এক টোটো মালিক দেবাশিস দে বলেন, ‘‘আমার টোটোর রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। করও দিই। যদিও শহরে প্রায় দু’হাজার অবৈধ টোটো রয়েছে। ওই টোটোগুলি রাস্তায় নামলেও দেখার কেউ নেই।’’ ২০১৫ সালে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে অটো কিনেছিলেন তোলাপাড়ার পলাশ দাস। শহরের শিরোমণি থেকে ডিএভি স্কুল রুটে অটো চালিয়ে আগে দিনে গড়ে ৭০০-৮০০ টাকা রোজগার ছিল তাঁর। অবৈধ টোটোর দাপটে এখন সেই রোজগার ২০০-২৫০ টাকায় নেমে এসেছে। তিনিও বলছেন, ‘‘অবৈধ টোটোর বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ অটো চালকদের একাংশের অভিযোগ, অবৈধ টোটোয় রাশ টানতে না পারলে আমাদের আয় তলানিতে ঠেকবে। তখন খাব কী।

‘মেদিনীপুর শহর অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন-এর সম্পাদক শেখ সিরাজ আলি বলেন, ‘‘অবৈধ টোটোর দাপটে অটো চালকদের রোজগার কমেছে। অবৈধ টোটো বন্ধের জন্য বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।’’ এ ক্ষেত্রে অবশ্য পরিবহণ দফতরের উপর দায় চাপাচ্ছে মেদিনীপুর পুরসভা। পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতরই কয়েকটি টোটোর রেজিস্ট্রেশন করেছে। তাই এই বিষয়টি তাদেরই দেখা উচিত।’’ পরিবহন দফতরের অতিরিক্ত আধিকারিক অমিত দত্ত বলেন, ‘‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy