নোটিসের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা।
আর কয়েক দিন পরেই নতুন শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে সেই বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। এরই মাঝে বিতর্কে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের শতাব্দীপ্রাচীন স্কুল। রীতিমতো নোটিস দিয়ে ওই স্কুলের তরফে বলা হয়েছে, যে জায়গায় ওই স্কুল অবস্থিত, কেবল মাত্র সেই অঞ্চলের পড়ুয়ারাই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। এমন ‘অদ্ভুত’ বিধিনিষেধের জেরে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক থেকে পড়ুয়ারা।
মহিষাদল গয়েশ্বরী গার্লস হাই স্কুলের ওই বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্ট একটি গ্রামের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দা বা ওই গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রীরাই কেবল মাত্র ওই স্কুলে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। বিজ্ঞপ্তির বয়ান হল, ‘‘কেবল মাত্র গড়কমলপুর গ্রামের অধীনস্থ বিদ্যালয় অথবা গড়কমলপুর গ্রামের বাসিন্দারাই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।’’
গোটা মহিষাদল বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে এটিই একমাত্র নামী এবং পুরনো গার্লস হাই স্কুল। প্রতি শিক্ষাবর্ষে শতাধিক ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তির আবেদন করে। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে বিভ্রান্ত এবং ক্ষুব্ধ স্কুল থেকে ১ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী অভিভাবকরা। বুধবার মেয়ের জন্য ওই স্কুলে ফর্ম তুলতে গিয়েছিলেন সরবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রত্না সামন্ত, তেরপেখ্যা গ্রামের বাসিন্দা তরুণ মাইতি কিংবা জগন্নাথপুরের শ্যামল বর্মণরা। কিন্তু স্কুলের এই অদ্ভুত নিয়মের গেরোয় হতাশ সকলেই। রত্নার কথায়, “এলাকার একমাত্র গার্লস স্কুলে মেয়েকে ভর্তি করতে চেয়েছিলাম। আজ স্কুল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হল। স্কুল থেকে বলা হল, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি নেবে। অথচ প্রাথমিক স্কুলে তো পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠনের পরিকাঠামো নেই। ওই গার্লস স্কুল সংলগ্ন প্রাথমিক স্কুলেও চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। এখন মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছি।” ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। রত্নার মতো ক্ষুব্ধ অভিভাবকের সংখ্যা বাড়ছে।
মহিষাদলের বাসিন্দা তপন মণ্ডলের কথায়, ‘‘স্বাধীনতার আগে তৈরি এই স্কুল। এমন স্কুলের প্রতি এলাকার মানুষের আবেগ রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে ছাত্রীরা ভর্তি হয়। সেখানে কেন শুধু মাত্র গড়কমলপুরের বাসিন্দারাই ভর্তির সুযোগ পাবে, এটাই আমার মাথায় ঢুকছে না।’’
এই বিজ্ঞপ্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন গয়েশ্বরী গার্লস হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা সঞ্চিতা গিরি। তাঁর যুক্তি, “এই স্কুলে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তাই পঞ্চম শ্রেণিতে বেশি ছাত্রী ভর্তি নিতে পারব না। স্কুলের পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে কেবল মাত্র একটি গ্রামের ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হবে।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘স্কুলে শিক্ষিকার ঘাটতি না মিটলে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রী ভর্তি নিতে পারব না।”
যদিও এ নিয়ে জেলা পরিদর্শক (ডিআই, সেকেন্ডারি) শুভাশিস মিত্রের দাবি ভিন্ন। এই নোটিস-বিতর্কে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “কোনও স্কুলে ছাত্রছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে এমন নির্দেশ দেওয়ার কোনও বিধি নেই। এ ক্ষেত্রে নির্দেশ জারি করতে পারে কেবল মাত্র শিক্ষা দফতর। কিন্তু রাজ্য শিক্ষা দফতরের এমন কোনও নির্দেশ ছাড়া কেন স্কুল থেকে এমন নোটিস জারি করা হয়েছে, তা জানা নেই।’’ তিনি এই বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy