Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

খাবারের খোঁজে গ্রামে ঢুকে গেরস্তের জানলায় শুঁড় বাড়াল ‘খড়ু’

অন্য কেউ হলে দেখা মাত্র চিৎকার শুরু করে দিতেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু এতদিনে খড়ুকে চিনে গিয়েছেন অনেকেই।

খাবারের খোঁজে। নিজস্ব চিত্র

খাবারের খোঁজে। নিজস্ব চিত্র

  নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৭
Share: Save:

সাত সকালে গ্রামে ঢুকে পড়ল ‘খড়ু’।

অন্য কেউ হলে দেখা মাত্র চিৎকার শুরু করে দিতেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু এতদিনে খড়ুকে চিনে গিয়েছেন অনেকেই। মেজাজটা তার তেমন তিরিক্ষে নয়। পেটে ছুঁচো ডন-বৈঠক মারতে শুরু করলে মাঝে মধ্যে গ্রামে ঢোকে সে। যেমন ঢুকেছিল বুধবার সকালে। ঝাড়গ্রামের ঘৃতখাম গ্রামে। তারপর কোনও উৎপাত না করে হেলেদুলে গ্রামের রাস্তা ধরে গমন। যেতে যেতেই খাওয়াদাওয়া। কখনও মাটির বাড়ির চালের খড়। আবার কখনও গৃহস্থের উঠোনের গাছের পাতা।

খড়ু আসলে একটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি। সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটাচলা করে বলে এলাকাবাসী তাকে খড়ু নামে ডাকেন।

বদমেজাজি নয়। কিন্তু বলা তো যায় না। হঠাৎ কিছু ঘটে যেতে কতক্ষণ। তাই খড়ু যখন গ্রামের কয়েকটি বাড়ির জানালায় শুঁড় গলিয়ে খাবার খুঁজছিল, তখন হই-হল্লা জুড়ে দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ধীর গতিতে জঙ্গলের দিকে চলে যায় হাতিটি। বন দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতেও পিয়ালগেড়িয়া ও বসন্তপুর গ্রামে ঢুকে পড়েছিল খড়ু। তবে বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে জঙ্গলের দিকে চলে গিয়েছিল।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, পূর্ণবয়স্ক রেসিডেন্সিয়াল হাতিটি গত কয়েক বছর ধরে গড়শালবনির জঙ্গলে রয়েছে। প্রায়ই লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে উঠে পড়ে এই হাতিটি। যানবাহন থামিয়ে খাবার খোঁজে। তবে মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। এলাকায় আরও কয়েকটি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। তাদের স্বভাব উগ্র। খাবারের খোঁজে রেসিডেন্ট হাতিরা মাটির বাড়িতে হানা দিয়ে চলে যায়। এর আগে একাধিক প্রাথমিক স্কুলের দরজা ভেঙে মিড ডে মিলের চাল খেয়েছে ওই হাতির দল।

চলতি মরসুমে ইতিমধ্যেই দলমার পালের কিছু হাতি টানা উপদ্রব চালিয়েছিল। দলমার হাতির হানায় কয়েক মাস আগে ঘৃতখাম ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামের তিন বাসিন্দার মৃত্যুও হয়েছে। এখন দলমার পাল এলাকায় নেই। তবে খড়ুর মতো রেসিডেন্ট হাতিগুলি লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। ঘৃতখামের বাসিন্দা মংলু মাহাতো, পাপন মাহাতোদের আশঙ্কা, ‘‘ছোটবেলা থেকেই এলাকায় হাতিদের দেখছি। আগে হাতিরা রাতের বেলায় লোকালয়ে ঢুকতো। এখন দিনের বেলাতেও হাতি গ্রামে ঢুকছে। সকালে গ্রামের রাস্তায় লোকজন খাকেন। স্কুল পড়ুয়ারা টিউশন পড়তে যায়। এভাবে হাতি ঢুকে পড়লে যে কোনও সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতিরা লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি করছে। তাদের এলাকা থেকে সরানো হচ্ছে না। অথচ বন দফতর উদাসীন। বর্ষার মরসুমে হাতিরা মাটির বাড়ির চাল থেকে খড় তুলে ফেলায় ফুটো চাল দিয়ে জল ঢুকে ভিজে যাচ্ছে ঘরের ভিতর। সমস্যায় পড়ছেন গরিব বাসিন্দারা। বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বহু চেষ্টা করেও রেসিডেন্ট হাতিদের এলাকা থেকে খেদানো সম্ভব হচ্ছে না। সহজে খাবারের খোঁজে রেডিডেন্ট হাতি প্রতিদিনই কোনও না কোনও গ্রামে ঢুকে পড়ছে।

ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলাইচ্চি বলেন, ‘‘দলমার পালের হাতিরা ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গিয়েছে। রেসিডেন্ট দু’টি হাতি এলাকার জঙ্গলে রয়েছে। তাদের এলাকা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy