ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় হস্তিশাবক আশ্বিনী। নিজস্ব চিত্র
ব্যতিক্রম যে হয় না তা নয়। তবে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ায় বহাল রইল হস্তিসমাজের কঠোর নিয়ম। মানুষের ছোঁয়া লাগায় এক শাবককে আর দলে ফিরিয়ে নিল না হাতির পাল।
বৃহস্পতিবার বনকর্মীরা শাবককে উদ্ধার করেছেন। রাতে তাকে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। আপাতত এখানেই শাবকটি থাকবে। আশ্বিন মাসের অতিথি। তাই বছর খানেকের ওই মেয়ে হস্তিশাবকটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আশ্বিনী’।
মেদিনীপুরের এক বনকর্তা মানছেন, ‘‘ওই শাবকটিকে হাতির দল আর ফিরিয়ে নেয়নি। ওর গায়ে মানুষের ছোঁয়া লেগে গিয়েছে বলেই দলটি ওকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছে।’’ শাবকটির চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় তার চিকিৎসা হবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, চাঁদড়ার জামডহরার কাছে হস্তিশাবকটি দলছুট হয়ে পড়ে। বুধবার রাতেই হাতির বড় দলটি লালগড় ছেড়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ায় আসে। দলটিতে প্রায় ৫০টি হাতি রয়েছে। সঙ্গে একাধিক শাবক রয়েছে। ওই শাবকটি তারই একটি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বিকেলে হাতির দলটি জামডহরার দিক থেকে পাথরির দিকে যাচ্ছিল। এখানে একটি ক্যানাল রয়েছে। ক্যানাল পেরোনোর সময়ে ওই শাবকটি দলছুট হয়ে পড়ে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘ক্যানালের কাছে ওই শাবকটি দল থেকে পিছিয়ে পড়ে। শাবকটি দলের বাকিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটতে পারছিল না। সম্ভবত সেই কারণেই পিছিয়ে পড়ে।’’ হস্তিশাবককে একা পেয়ে উত্তেজনার বশে তাকে ছুঁয়ে দেয় এলাকার উৎসাহী জনা কয়েক যুবক। কয়েকজন তাকে তাড়াও করেন। শাবকটি অবশ্য বেশি দৌড়তে পারেনি। কিছুটা দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। স্থানীয় বিষ্ণু মাহাতোর কথায়, ‘‘শাবকটি খেই হারিয়ে ফেলেছিল। তাই দলছুট হয়ে যায়।’’
বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত হাতির দল শাবকের জন্য অপেক্ষা না করেই ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। এ ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। দলটি ধীরে ধীরে পাথরির দিকে চলে গিয়েছে। শাবকটি জামডহরার কাছে থেকে গিয়েছে। বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কখনও কখনও নিয়ম-রীতির ব্যতিক্রম হয়। দেখা যায় অপত্য স্নেহের কাছে হার মানে রীতি। শাবককে নিতে ফিরে আসে তার মা।
এ ক্ষেত্রে অবশ্য তা হয়নি। মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, ‘‘সাধারণত এমন শাবককে আর ফিরিয়ে নেয় না হাতির দল। কারণ, মানুষের ছোঁয়া লাগা মানেই হস্তিসমাজের কাছে ওই শাবক ব্রাত্য!’’ শাবকটির উপর নজর রেখেছিলেন বনকর্মীরা। দল ফিরিয়ে নেয়নি দেখে শেষমেশ তাকে উদ্ধার করেছেন তাঁরা।
রাতেই ‘স্পর্শদুষ্ট’ শাবককে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। একাদশীতেও পরিবার- পরিজনেদের সঙ্গে ছিল যে শাবক, দ্বাদশীতে সে একা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy