ক্রেতার আশায়। নিজস্ব চিত্র
মরফিন গুজব নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হতে বলল স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে এই ধরনের গুজব ছড়ালে কঠোর পদক্ষেপ করার কথাও জানিয়েছে তারা।
গুজব রুখতে প্রশাসন তৎপর হলেও গুজবের জেরে শিল্পশহরে ভাটা মুরগি মাংস ব্যবসায়। ‘মরফিন নামে একটি মারাত্মক ভাইরাস মুরগির মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেই রোগ নাকি এমনই মারাত্মক, তার জেরে মৃত্যু হতে পারে মানুষের’। সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাল এই গুজব। খবরটি নাকি স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে প্রকাশ করা হচ্ছে, এমনও বলা হচ্ছে। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই গুজব সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিত্তিহীন এই খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিল্পশহরে। হলদিয়া জুড়ে ইতিমধ্যেই মুরগির মাংস বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমে গিয়েছে বলে মাংস ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, গুজবের জেরে মানুষ মুরগি ছেড়ে মাছের দিকে ঝুঁকছেন বেশি। ফলে রবিবার অনেকের মাংস-ভাতের মেনুতে বদল ঘটেছে।
গুজবের জেরে মাথায় হাত মাংস ব্যবসায়ীদের। হলদিয়ার এক মাংস বিক্রেতা আজাদ বলেন, ‘‘ফেসবুকে দেখে মানুষ মাংস খেতে ভয় পাচ্ছে। সবাই ভাবছে মাংস খেলেই বোধহয় তাদের শরীরে বাসা বাঁধবে মরফিন। আর তাতে নাকি মৃত্যু অবধারিত। আগে যেখানে দেন প্রায় ৬০ কেজি-র মতো মাংস বিক্রি হত, এখন কমে তা দিনে ৩০ কেজিতে ঠেকেছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, হলদিয়ার বেশ কয়েকটি বাজারে গত দু’দিন ধরেই গোটা মুরগি বিকোচ্ছে মাত্র একশো টাকায়। তাতেও ক্রেতা মিলছে না। স্বভাবতই মাথায় হাত পড়েছে মুরগি মাংস বিক্রেতাদের। কী ভাবে ক্ষতির বোঝা সামলাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। দুর্গাচকের বাসিন্দা প্রতাপ মাইতি বলেন, ‘‘বাড়িতে প্রতি রবিবার মেনুতে মাংস থাকত। কিন্তু কয়েকদিন ধরে যে ভাবে সামাজিক মাধ্যমে মরফিন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর ঘোরাফেরা করছে তার পরে আর মাংস খাওয়ার সাহস পাচ্ছি না।’’
গোটা বিষয়টাকে ভিত্তিহীন ও অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফকর। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মরফিন নামক রোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই রোগ কোনও রাজ্যে হানা দিয়েছে বলে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। অহেতুক মানুষজন সামাজিক মাধ্যমের খবর দেখে ভয় পেয়ে মাংস খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মরফিনের গুজব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কিন্তু যদি সামাজিক মাধ্যমে খবর এভাবে ছড়াতে থাকে তা হলে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যারা এই খবর ছড়ানোর কাজে সহায়তা করবে সাইবার ক্রাইমের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy