Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত প্রধান শিক্ষক

স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বেলদায় ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে গাড়িতে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায় আশুতোষকে।

ধৃত আশুতোষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

ধৃত আশুতোষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলদা ও সবং শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৭
Share: Save:

স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে একাধিক বার তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন প্রধান শিক্ষক। সবংয়ের একটি হাইস্কুলের ওই প্রধান শিক্ষক বছর সাতচল্লিশের আশুতোষ মণ্ডল এর আগেও স্কুলে সহশিক্ষা চালু করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বেলদায় ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে গাড়িতে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায় আশুতোষকে। স্থানীয় বাসিন্দারাই শিক্ষক ও ছাত্রীকে হাতেনাতে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীর বাবা আশুতোষের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও বেশ কয়েকবার মেয়েকে স্কুলের হস্টেল থেকে ফুঁসলিয়ে ওড়িশায় নিয়ে যায় বিবাহিত ওই প্রধান শিক্ষক। এমনকি, লজে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে ঘটনার কথা জানালে প্রাণে মারার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর বাবার কথায়, “এতদিন কিছুই জানতাম না। গত ২৩ জানুয়ারি স্কুল হস্টেল থেকে মেয়ে বাড়িতে এসেছিল। কম্পিউটার ক্লাসে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। পথে আশুতোষ মণ্ডল আমার মেয়েকে জোর করে গাড়িতে তুলেছিল। গ্রামবাসীরা ধরার পরে এখন মেয়ে সমস্ত কথা খুলে বলল। তারপর সবকিছু জানলাম।”

ঘটনাটি ঘিরে শোরগোল পড়েছে সবং এলাকায়। কারণ, গত কয়েকমাস ধরেই আশুতোষের কার্যকলাপ সমালোচনার মুখে পড়েছে। গত নভেম্বরে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সহশিক্ষা চালু করতে চেয়ে শিক্ষা দফতরের আবেদন জানিয়েছিল আশুতোষ। ওই স্কুল থেকে মেরেকেটে ৫০মিটার দূরেই রয়েছে একটি বালিকা বিদ্যালয়। পরিকাঠামোর অভাবে ওই বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রী সংখ্যা গত কয়েক বছরে কমেছে। ওই স্কুলে সহশিক্ষা চালু হলে পাশের বালিকা বিদ্যালয় বন্ধের আশঙ্কা দেখা যায়। অভিযোগ, অনুমতির তোয়াক্কা না করেই ছাত্রী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করে আশুতোষ। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দেন, সহশিক্ষা চালু করা যাবে না।

শুক্রবার মেদিনীপুরে পকসো আদালতে তোলা হয় আশুতোষকে। কিন্তু আদালত বন্ধ ছিল। তাই প্রধান শিক্ষককে তোলা হয় সিজেএম আদালতে। বিচারক একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ, শনিবার পকসো আদালতে তোলা হবে আশুতোষকে। আদালত বন্ধ থাকায় এ দিন ওই ছাত্রীর গোপন জবাববন্দি নেওয়া যায়নি। তবে তার শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দার বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। আগামী সোমবার স্কুলে একটি তদন্ত কমিটি পাঠিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়ে পদক্ষেপ করব।” ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “আমি দিল্লিতে রয়েছি। এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। জেলার মধ্যে এই স্কুলের সুনাম ছিল। প্রধান শিক্ষক যিনি ছ’মাস আগে এসেছেন তিনি এই স্কুলের ইতিহাসে কলঙ্ক মাখিয়ে দিলেন। আমাদের বাড়ির মেয়েরা এই স্কুলে পড়তে আসবে কি না, এখন ভাবতে হবে। আমি ফিরে সেই আতঙ্ক কাটাতে যা করার করব। প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Rape Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy