দখলদার হটাতে বুধবার দিঘার সৈকতে উচ্ছেদ অভিযান। নিজস্ব চিত্র
রাজনৈতিক অশান্তির আশঙ্কা ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। কিন্তু বুধবার সৈকত শহর দিঘায় শান্তিতেই হল প্রশাসনের হকার উচ্ছেদ অভিযান।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এ দিন সকাল থেকে ওল্ড এবং নিউ দিঘা জুড়ে হকার উচ্ছেদ অভিযান চালায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। ছিলেন কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ, রামনগর-১ ব্লক, পূর্ত, ভূমি এবং সেচ দফতরের বিভাগীয় আধিকারিকেরা। তবে অভিযানের আগে মঙ্গলবার রাত থেকেই সৈকতের উপর বেআইনি ভাবে তৈরি করা বহু দোকান নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছিলেন হকারেরা। স্থানীয় হাকারদের দাবি, প্রায় হাজারখানেক হকারদের মধ্যে রাতেই প্রায় ৭০ শতাংশ হকার নিজেদের দোকান সরিয়ে নিয়েছিলেন।
সকাল থেকে দিঘার একাধিক জায়গায় বেশ কিছু দোকান ভাঙা দেখা যায়। যা হকারেরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভেঙে দিয়েছেন বলে দাবি রামনগর-১ ব্লক প্রশাসনের। চন্দন পইড়্যা নামে এক হকার বলেন, ‘‘দোকান থেকে জিনিসপত্র ব্যক্তিগতভাবে সরিয়ে নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। প্রশাসন যেভাবে বুলডোজার দিয়ে দোকান গুড়িয়ে দিচ্ছিল, তাতে অনেক ক্ষতি হতে পারত। আর্থিক ক্ষতি এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’’
উল্লেখ্য, আগামী ডিসেম্বরে দিঘায় বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন হবে। তার আগে সৈকত শহরে বেআইনি দখলদার সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে উচ্ছেদ অভিযান করার সময় কয়েকশো হকারকে নিয়ে আন্দোলন করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। তাতে সাময়িকভাবে অভিযান স্থগিতহয়। পুজো মিটতেই ফের উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এ নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর উচ্ছেদের নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি মাইকে প্রচার করা হয়। এক সপ্তাহের জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও বিজেপি নেতৃত্ব ওই সব হকারেরা পুনর্বাসন ছাড়া সরাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
এ দিন বিনা বাধায় অভিযান চললেও শহর জুড়ে ছিল উত্তেজনার আবহ। পরবর্তী সময়ে উচ্ছেদ হওয়া হকারদের ফের সৈকতের ধারে বসানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি (কাঁথি) তপন মাইতি বলেন, ‘‘পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ করে গরিবের পেটে লাথি মারল রাজ্য সরকার। এর প্রতিফলন আগামী বিধানসভা ভোটে পড়বে। কিছুদিনের মধ্যেই হকারেরা যাতে ফের সৈকতে ব্যবসা করতে পারে, তার জন্য আমরা লাগাতার আন্দোলন করব।’’
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে খবর, যে সব জায়গায় পুনর্বাসন স্টল তৈরি হয়েছিল, তার দ্বিতলে স্টল নিতে হকারদের একাংশ অনিচ্ছুক হওয়ায় সমস্যা হয়। এছাড়া শ’চারেক কুপন প্রাপ্ত হকার পুনর্বাসন স্টল পাননি। তাঁদের জন্য একটি জায়গা বেছে রাখা হয়েছে। সেখানে পুনর্বাসন স্টল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলে, তা বিলি করা হবে।
এ ব্যাপারে ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নিতাইচরণ সার বলেন, ‘‘হকারদের জন্যই পুনর্বাসন স্টল বানিয়েছে রাজ্য সরকার। সিংহভাগ হকার সেই সুযোগ পেয়েছেন। কিছু অসাধু মানুষ স্টল পাওয়ার পরেও সৈকতের ধারে ব্যবসা করছে। এখনও যেসব হকার পুনর্বাসন স্টল পায়নি, তাঁদের জন্য দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy