Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
security guards

রক্ষী হারালেন অমূল্য

পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়েই কার্যত সাঁড়াশি চাপে রয়েছেন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতারা। একাধিক শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ নেতাকে সরকারি পদ থেকে সরানো হয়েছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারও শুরু হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৩৭
Share: Save:

ফের কোপে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ। এ বার নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির।

মানস ভুঁইয়ার বিরোধী বলে পরিচিত সবংয়ের নেতা অমূল্য বরাবর শুভেন্দু অধিকারীর কাছের লোক। মাস খানেক ধরে তাঁর নেতৃত্বে ব্লক জুড়ে শুভেন্দুর ছবি দেওয়া হোর্ডিং লাগাচ্ছিলেন ‘দাদার অনুগামী’রা। ক’দিন আগে শুভেন্দু আসার পরে তাঁর কিছু অনুগামী আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সময় তৃণমূল সাংসদ মানসের বিরুদ্ধেই সরাসরি আঙুল তুলেছিলেন অমূল্য।

এই আবহে বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর থেকে সবংয়ের বাড়িতে ফেরার পরেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা চলে যান বলে জানিয়েছেন অমূল্য। তাঁর থেকে প্রস্থানের শংসাপত্র না নিয়েই দুই নিরাপত্তারক্ষী তড়িঘড়ি চলে গিয়েছেন বলেও দাবি তাঁর। অমূল্যর সরাসরি অভিযোগ, “আমি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেই আমার নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যহার করা হয়েছে। যিনি সবংয়ে নিরাপত্তা বলয়ে ঘোরেন সেই ‘কাগুজে বাঘ’ মানস ভুঁইয়া প্রশাসনকে প্রভাবিত করে এটা করিয়েছেন। আমি তো নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে জন্ম নিইনি। তাই ভয় পাই না। মানুষের ঘেরাটোপে থেকেই মানুষের কাজ করে যাব।” অমূল্য আরও বলেন, ‘‘দলবিরোধী কোনও কার্যকলাপ করিনি। দিদির প্রতি শ্রদ্ধা, আস্থা আজও রয়েছে। আর আমি শুভেন্দুর অনুগামী নই। শুভেন্দুর শুভানুধ্যায়ী। শুভেন্দুর পরিবারের সঙ্গে আমার চল্লিশ বছরের সম্পর্ক।’’

মানসের প্রতিক্রিয়া, “এ সব প্রশাসনিক বিষয়। এখানে আমি কী করব!” পুলিশের এক সূত্রের বক্তব্য, নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কার রক্ষী থাকবে, কার না, সে বিষয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ভূমিকা থাকে।

বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়েই কার্যত সাঁড়াশি চাপে রয়েছেন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতারা। একাধিক শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ নেতাকে সরকারি পদ থেকে সরানো হয়েছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারও শুরু হয়েছে। পরশু, সোমবার মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জনসভার প্রস্তুতি কর্মসূচি থেকেও তাঁদের ‘ব্রাত্য’ রাখা হয়েছে। অমূল্য অবশ্য নেত্রীর সভায় যাবেন বলছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন যাব না? এখন যিনি জেলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি অনেক দিন ধরেই দলের কর্মসূচিতে আমাকে ডাকছেন না। আমি তো অন্য দলে এখনও যাইনি। না ডাকলেও যাব দিদির কথা শুনতে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, সব নেতাকেই দলীয় কর্মসূচিতে ডাকা হয়।

সম্প্রতি মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী থেকে অপসারিত হয়েছেন শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ প্রণব বসু। তারপর জেলা পরিষদের মেন্টর পদ থেকেও নিজেই ইস্তফা দিয়েছেন প্রণব। খড়ার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন উত্তম মুখোপাধ্যায়কেও সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলুইকে। উত্তমকে সরানোর পিছনেও তাঁর শুভেন্দু- ঘনিষ্ঠতার ব্যাখ্যাই সামনে আসছে।

সাম্প্রতিক এই ঘটনা প্রবাহে জেলা পরিষদের অন্দরেও শোরগোল পড়েছে। শুধু জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি কিংবা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি নন, জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তপন দত্ত, উপাধ্যক্ষ কাবেরী চট্টোপাধ্যায়রাও শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ। রমাপ্রসাদদের অপসারণ সম্ভব নয়। কারণ, পঞ্চায়েত আইন বলছে, আড়াই বছরের আগে নির্বাচিত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় না। জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়েছে ২০১৮-র ডিসেম্বরে। অর্থাৎ, ২০২১ সালের জুনের আগে অনাস্থা আনা যাবে না। একাধিক মহলের ধারণা, তৃণমূলের মূলস্রোতে না থাকলে পদত্যাগের জন্য রমাপ্রসাদদের ‘চাপ’ দেওয়া হতে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy