পঁচেটগড়ের জমিদার বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের হেরিটেজ ঘোষণার পরেও বেহাত হচ্ছে পঁচেটের জমিদার বাড়ির সম্পত্তি। জমিদার বাড়ির দেবোত্তর সম্পত্তি টাকার বিনিময়ে বেআইনি ভাবে লিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠল জমিদার বাড়ির এক অংশীদারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পঁচেটগড় সেবায়ত বোর্ড।
ষোড়শ শতাব্দীর প্রাচীন পঁচেটগড় জমিদার বাড়ির স্থাপত্য আজও পটাশপুরের ঐতিহ্য বহন করছে। আনুমানিক ১৫৬৪ সালে কালু মুরারিমোহন ওড়িশা থেকে পটাশপুর পরগনায় এসে পঁচেটে রাজধানী বা গড়হাভেলি তৈরি করেন। স্বাধীনতার পরে জমিদারি প্রথার বিলোপের কারণে সম্পত্তি বেহাত হতে থাকে। গড়ের কয়েকশো একর জমি এখলও বর্গাদারদের দখলে। জমিদারি শেষ হয়ে যাওয়ায় কোষাগারে অর্থাভাবে জমিদার বাড়ির স্থাপত্য-সহ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে ‘পঁচেট গড় দেবোত্তর সেবায়ত বোর্ড’ গঠন করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু তাও যথোপযুক্ত ছিল না। ২০১৮ সালে ১৩ অগস্ট রাজ্য সরকার পঁচেটগড় জমিদার বাড়ি ও বাড়ি সংলগ্ন জায়গা হেরিটেজ ঘোষণা করে। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যকে সরকারি ভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়। তবে সরকারি সেই উদ্যোগ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই সরকার স্বীকৃত ‘পঁচেটগড় দেবোত্তর সেবায়ত বোর্ড’ই জমিদার বাড়ির সম্পত্তি দেখভাল করছে।
পটাশপুরের খাড় গ্রামে জমিদার বাড়ির কুলদেবতার কয়েক একর সম্পত্তি রয়েছে। অভিযোগ, সেই সব সম্পত্তি সেবায়ত বোর্ডের নজর এড়িয়ে গোপনে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছে অসাধু জমি দালাল চক্র। জমিদারবাড়ির এক অংশীদার ফাল্গুনী দাস মহাপাত্র বেআইনি ভাবে জমি হাঙর চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই সব কাজ করছে। টাকার বিনিময়ে সেই জমি কিনে সাধারণ মানুষের প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সেবায়ত বোর্ড।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জমিদার বাড়ি সম্পত্তি লেনদেনের অধিকার শুধুমাত্র সেবায়ত বোর্ডের হাতে রয়েছে। সেখানে যে কেউ এই সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে না। তাই বেআইনি ভাবে সম্পত্তিলিজ দেওয়ার অভিযোগে ফাল্গুনী দাস মহাপাত্রের বিরুদ্ধে পটাশপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সেবায়ত বোর্ডের সম্পাদক সুব্রত নন্দন দাস মহাপাত্র। তিনি বলন, ‘‘অভিযুক্ত বেআইনি ভাবে টাকার বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তর করছে। সাধারণ মানুষ এ ভাবে সম্পত্তি নিতে পারে না। অসাধু লোকের ফাঁদে পড়ে তারা প্রতারিত হবে।তাই ফাল্গুনী দাস মহাপাত্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’
অভিযুক্ত ফাল্গুনী দাস মহাপাত্রর দাবি, ‘‘বোর্ডের সম্পাদক পদে থেকে সুব্রত নন্দন দাস মহাপাত্র গত আট বছরে বোর্ডকে কোনও হিসাব দেননি। জমিদার বাড়ির সম্পত্তি ও প্রচুর টাকা তিনি নয়ছয় করেছেন। অংশীদারী সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত টাকা আমি বোর্ডের অ্যাকাউন্টে দিয়েছি। দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy