গণনাকেন্দ্র থেকে বেরোচ্ছেন বিরবাহা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ইঙ্গিত দিয়েছিল হাসি ফিকে হচ্ছে জঙ্গলমহলের। হাসি ফেরানোর ভার তৃণমূল নেত্রী সঁপেছিলেন খোদ দলের মহাসচিবকে। আশা ছিল পক্ষে যাবে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক কাটাকুটির অঙ্ক। শেষপর্যন্ত দেখা গেল, বছরভর চেষ্টা করেও আদিবাসী-ক্ষোভ প্রশমন করা গেল না। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনকে ৯,৬৬৬টি ভোটে ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হলেন বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম।
কুনার জিতলেন বটে। তবে বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রায় শেষ লগ্নে যেন চলল সাপ-লুডোর খেলা। বিরবাহার সঙ্গে ব্যবধান কমতে কমতে একসময় প্রায় ৬হাজারে এসে দাঁড়িয়েছিল। অথচ শুরুটা এমন ছিল না। প্রথমে অল্প থাকলেও পরে লাগাতার ব্যবধান বাড়াচ্ছিলেন কুনার। একসময় তা প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছয়। শেষ মুহূর্তের এই ওঠাপড়া কেন? তৃণমূল সূত্রের খবর, সে সময় শালবনি ও বিনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের গণনা চলছিল। ওই দু’টি ছাড়া বাকি পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রেই লিড পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
শাসকদলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগে সরব হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে নিয়েছিল বিজেপি। তার পরেও গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম লোকসভা এলাকায় তৃণমূল পেয়েছিল ৪৭ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি ভোট পেয়েছিল ৩৯.০৪ শতাংশ। তৃণমূলের ভোট করানো অভিজ্ঞ কর্মীরা বলছেন, পঞ্চায়েতে সিপিএমের বেশ কিছু ভোট বিজেপি-র ঘরে গিয়েছিল। তাতেও পঞ্চায়েতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। এবার সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রম থেকেও লোকসভায় সুবিধা করতে পারল না বামেরা।
ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের মহিলা শাখার গণনা কেন্দ্রে এক তৃণমূল কর্মী বলছিলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষণ আর স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ, তারাই হলেন প্রচারের মুখ। অথচ দীর্ঘদিন যাঁরা দলের পতাকা নিয়ে কাজ করলেন তাঁরা ব্রাত্য থেকে গেলেন। ওই বৈষম্যের ফলেই তো বিজেপি-র পরিয়াযী নেতা এসে ঘর ভাঙতে পারলেন।’’ ঝাড়গ্রামে মোদীর সভার ঠিক আগে এসেছিলেন বিজেপি-র এক নেতা। অভিযোগ, তৃণমূলের এক প্রবীণ জেলা নেতার অতিথিশালায় উঠেছিলেন বিজেপি-র ওই নেতা। তৃণমূলের কয়েকজন নেতা গোপনে ওই বিজেপি নেতার সঙ্গে দেখাও করে এসেছিলেন বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে। আপাতত তৃণমূলের অন্দরের বিশ্লেষণ, পারাগানা মহলের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রীকে তৃণমূলের প্রার্থী করা নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। তার উপর দলীয় নেতাদের অন্তর্ঘাত যুক্ত হওয়ায় আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক বিভাজনের সুবিধা নেওয়া যায়নি। জেলা তৃণমূল কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলছেন, ‘‘ফলের সামগ্রিক বিশ্লেষণ করা হবে।’’ আর বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের জোশ, মুকুল রায়ের ফোঁস, তৃণমূলের দোষ! তাই আমরা জিতলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy