নার্সারিরতে প্রণবীর মাইতি। নিজস্ব চিত্র।
হঠাৎই লাল হয়ে যাচ্ছে গোলাপ গাছের পাতা। তারপর শুকনো হয়ে ঝরে পড়ছে। সেই সঙ্গে গাছের ডালে তামাটে রঙের লম্বা লম্বা দাগ হয়ে পড়ছে। অকালেই মরে হয়ে যাচ্ছে গাছ।
যে গাছগুলি রোগের প্রকোপ থেকে কোনওরকমে বাঁচছে, সেগুলিতেও তেমন ফুল ফুটছে না। ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত অংশ কেটে ফেললেও তেমন কোনও লাভ হচ্ছে না। যার ফলে গোলাপ চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে। ওষুধ ব্যবহার করে সেই রোগ আটকানোর চেষ্টা করছে খড়গপুর এর জকপুর এলাকার নার্সারিগুলি। প্রায় তিনশো প্রজাতির গোলাপ চাষ হয় ওই এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমির নার্সারি গুলিতে। চাহিদা মতো ফুলের চারা নিয়ে বাড়ির ছাদে বা বাগান সাজান ফুল প্রমীরা। কিন্তু অজানা রোগের কারণে নার্সারি মালিকেরা চিন্তিত।
জকপুরের একটি নার্সারির কর্ণধার প্রণবীর মাইতি ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে ফুল, ফল ও পাতা বহরের গাছ নিয়ে কাজ শুরু করেন। এখন তাঁর বয়স ৬০ বছর। গত বছর হঠাৎ গোলাপ ফুলের অজানা রোগ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গোলাপ গাছগুলিতে যে রোগ দেখা দিয়েছে তা ছত্রাক (ফাঙ্গাস) ঘটিত বলে আমরা জানতে পেরেছি। তার জন্য ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। মাত্র ৪০ মিলি ওষুধের দাম প্রায় ১,১০০ টাকা। তা দিয়ে আপাতত বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের সাথেও বিষয়টি নিয়ে এলাকার নার্সারির মালিকেরা কথা বলেছেন।’’
এ প্রসঙ্গে রাজ্য উদ্যান পালন (হর্টিকালচার) বিভাগের উপ-অধিকর্তা কুশধ্বজ বাগ বলেন, ‘‘শীতকালেই এই ছত্রাক ঘটিত রোগটির প্রকোপ দেখা যায়। শীতের পর রোগটির প্রাদুর্ভাব করে। বিষয়টির সমাধান করতে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সাহায্য নিচ্ছি আমরা।’’ তিনি জানান, ছত্রাক হামলার আগে আগাম সতর্কতা মূলক ব্যবস্তা হিসেবে ইন্ডোফিল এম-৪৫ (প্রতি লিটার জলে ৩ এমএল) বা কাস্টোডিয়া প্রতি লিটার জলে দেড় এমএল) জাতীয় ওষুধ স্প্রে করা যেতে পারে। সংক্রমণের প্রাথমিক স্তরে কাস্টোডিয়া বা মক্সিমাইট (প্রতি লিটার জলে ৩ থেকে ৪ এমএল) কাজ দেয়। সংক্রমণ বেড়ে গেলে অ্যামিস্টার টপের মতো দামী ওষুধ ব্যবহার ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।
প্রণবীর জানান, এই সময় গোলাপের চাহিদা প্রচুর। সেই চাহিদা পূরণের জন্য চারা তৈরি করে জোগান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জানালেন তাঁর নার্সারি থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনেও যায় গোলাপ ফুলের চারা। ২০২০ সালে তৈরি দু’টি গোলাপের নাম দেওয়া হয়েছে কন্যাশ্রী এবং বিশ্ব বাংলা। কন্যাশ্রী গোলাপ দেখতে ক্রিম হোয়াইট। বিশ্ব বাংলা বিস্কুট হলুদ রঙের। বলেন, ‘‘নতুন প্রজাতির চারা তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ৪ বছর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy