টিনটোরেটোর যিশুর শ্যুটিং। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে। ফাইল চিত্র
করোনা আবহে পর্যটকদের টানতে ঝাড়গ্রামে চালু হচ্ছে ‘ফিল্ম ট্যুরিজম’। লক ডাউনে ঝাড়গ্রামের পর্যটন-ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের কাছে ঝাড়গ্রামকে নতুন রূপে হাজির করতে উদ্যোগী হয়েছে পর্যটন দফতর স্বীকৃত ‘ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম’ সংস্থা। ‘চলচ্চিত্র পর্যটনে ঝাড়গ্রাম’— দু’রাত তিন দিনের প্যাকেজে পর্যটকদের ঝাড়গ্রামের সেই সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখানো হবে, যেখানে গত সাড়ে চার দশকে বহু বিখ্যাত বাংলা সিনেমার দৃশ্যগ্রহণ হয়েছে।
সত্তরের দশকের ‘সন্ন্যাসী রাজা’ থেকে হাল আমলের ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’। গত সাড়ে চার দশকে এক ডজনেরও বেশি কালজয়ী সব বাংলা সিনেমায় দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রামের মল্লদেব রাজপ্রাসাদ, রাজপরিবারের সাবিত্রী মন্দির, চিল্কিগড়ের ধবলদেব রাজ পরিবারের কনকদুর্গা মন্দির, চিল্কিগড় রাজপ্রাসাদ, কলাবনির জঙ্গল, বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর, ঘাগরার মতো জায়গাগুলি। রুপোলি পর্দায় সব জায়গা দেখা যায়, বাস্তবেও সেগুলি দেখতে আগ্রহী হন অনেকে। ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম-এর কর্তা সুমিত দত্ত জানালেন, এই আগ্রহের উপর ভিত্তি করেই ‘ফিল্ম ট্যুরিজমে’র পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঝাড়গ্রামে শ্যুটিং হয়েছে এমন বিভিন্ন সিনেমার দৃশ্য-কোলাজ নিয়ে একটি ভিডিয়ো-তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে। বেড়ানোর সময় এই ভিডিয়োর লিঙ্ক মোবাইলে পাবেন পর্যটকেরা।
১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত উত্তমকুমার অভিনীত ‘সন্ন্যাসী রাজা’ ছবির বেশ কিছু অংশের দৃশ্যগ্রহণ হয়েছিল ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদে। ওই বছরই মুক্তিপ্রাপ্ত উত্তম কুমার অভিনীত ‘বাঘবন্দি খেলা’ সিনেমাতেও ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদ, সরডিহা রেলস্টেশন, সরডিহার একটি চালকল ও রাস্তাঘাটের দৃশ্য রয়েছে। সত্তরের দশকের ‘রাজবংশ’ ছবির গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশের শ্যুটিং হয়েছিল ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদে। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চিন্ময় রায় অভিনীত টেনিদার কাহিনি অবলম্বনে ‘চারমূর্তি’ ছবির ঝন্টিপাহাড়ি আসলে বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোড় গ্রাম। ২০০৮ সালে সন্দীপ রায় পরিচালিত সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি অবলম্বনে ‘টিনটোরেটোর যিশু’ ছবিতে নিয়োগী বাড়ি হিসেবে ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদের বিভিন্ন এলাকাকে দেখানো হয়েছিল। গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত আবির চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ ছবির অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদ ও চিল্কিগড় রাজপ্রাসাদ চত্বর।
সুমিতের দাবি, বাংলা ছবির প্রযোজক ও পরিচালকদের কাছেও পর্যটন দফতরের তরফ থেকে বার্তা দিতে চান তাঁরা। সুমিত বলছেন, ‘‘কম খরচে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকায় শ্যুটিংয়ের আদর্শ জায়গা ঝাড়গ্রাম। সেটা উত্তমকুমার থেকে আবিরের জমানার ছবিই জানান দিচ্ছে।’’ সুমিত জানালেন, করোনা পরিস্থিতিতেও ফিল্ম ট্যুরিজম নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পর্যটকদের একাংশ। ইতিমধ্যে কয়েকটি অগ্রিম বুকিংও হয়েছে। ঝাড়গ্রাম রাজ পরিবারের সদস্য জয়দীপ মল্লদেব বলেন, ‘‘ফিল্ম ট্যুরিজমের ভাবনাটি অভিনব। গত ৪৫ বছরে বারে বারে বাংলা সিনেমায় ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদ ও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকা উঠে এসেছে। রাজবাড়ির অতিথিশালায় বেশ কয়েকবার থেকে গিয়েছিলেন স্বয়ং উত্তমকুমার। লকডাউনে বন্ধ থাকার পরে রাজবাড়ির অতিথিশালা ১০ জুন থেকে খেলা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy