Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
মমতার চোটে চাপানউতোর
Mamata Banerjee

সেরে উঠুন, প্রার্থনা শহিদ পরিবারের

মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ০৪:৫৬
Share: Save:

মনোনয়নের সকালটা ভাল কাটলেও দিনের শেষটা ভাল গেল না মুখ্যমন্ত্রীর। প্রচারের পথে দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর চোট পেলেন মমতা।

বুধবার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর উপর পরিকল্পিত আক্রমণের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছে বিজেপি। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মমতা এ দিন মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন হলদিয়া মহকুমাশাসকের অফিসে। সেখান থেকে ফের নন্দীগ্রামে ফিরে মমতা বিকেলে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের রানিচক এলাকায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে ফেরার পথে বিরুলিয়ার কাছে মুখ্যমন্ত্রী এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার সময়েই ভিড়ের মধ্যে চার-পাঁচজন তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করায় পায়ে ও মাথায় চোট পান বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী আহত হওয়ার জেরে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বুধবার সকালে রেয়াপাড়ার শিবমন্দিরে পুজো দিয়ে মমতা হেলিকপ্টারে দুপুরে হলদিয়া পৌঁছন। বাসুদেবপুরের থেকে হলদিয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী স্বপন নস্কর এবং মহিষাদলের প্রার্থী তিলক চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে পদযাত্রা করে হলদিয়া মহকুমাশাসকের দফতরে যান তিনি। সে সময় ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগান লেখা পোস্টার ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মহিলাদের। 'খেলা হবে' স্লোগান দেন আমজনতাও।

এ দিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ কমিটির নেতা আব্দুল সামাদ, জমি আন্দোলনে নিহত রবিন দাসের স্ত্রী সুষমা দাস, মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে দফতরের সামনে মমতা বলেন, ‘‘মহাদেব বাগ, স্বদেশরঞ্জন দাস, আব্দুল সামাদ, ও শহিদ পরিবারের সদস্য সুষমা দাসরা হল আমার প্রস্তাবক। শেখ সুফিয়ান মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। নন্দীগ্রামের মা ভাই বোনেরা তৃণমূলের প্রতীকে ভোট দিয়ে তৃণমূলকে জয়যুক্ত করবেন।’’ নন্দীগ্রামের সঙ্গে যে তাঁর সম্পর্ক পুরনো, সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় পাশে ছিলাম আমি। কৃষি আন্দোলনের জন্য ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। তাই তো বলি— ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলবো নাকো নন্দীগ্রাম।’’

মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও। ২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনে ১৪ মার্চ নিহত সুপ্রিয়া জানার স্বামী সুকুমার জানা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হওয়ার ঘটনা জানার পর খুবই উদ্বেগে রয়েছি। নন্দীগ্রামে এসে উনি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। সবার সঙ্গে মিশেছেন। তার মধ্যে এই ঘটনা। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও কী ভাবে এমন ঘটল জানি না। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন সেই কামনা করছি।’’

মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় জেলা তৃণমূলের নেতৃত্ব বিরোধী বিজেপি’র বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পরিবেশ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করেছে বিজেপি। ঘটনায় পুলিশি নিরাপত্তায় গাফিলতি রয়েছে। যেহেতু পুলিশ এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে রয়েছে তাই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’

সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপর যদি এভাবে আক্রমণ করা হয় তাহলে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের যে গাফিলতি রয়েছে তা প্রমাণ হচ্ছে।’’

যদিও ঘটনা নিয়ে বিজেপি’র জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সাথে পুলিশ বাহিনী রয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রচারের সময়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা ওখানে যাবেন কেন। এভাবে নাটক করে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে । তবে নন্দীগ্রাম সহ রাজ্যের মানুষ সব বুঝে গিয়েছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy