Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ফলহারিণী কালীপুজোয় মাতে পাঁশকুড়ার ধীবরদের গ্রাম

ফলহারিণী কালীপুজোকে ঘিরে মেতে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু গ্রাম। প্রত্যেক বছর জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পুজোর আয়োজন করা হয়।

তিনতাউড়ি বেগুনবাড়ির কালী মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

তিনতাউড়ি বেগুনবাড়ির কালী মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ১২:৩৩
Share: Save:

ফলহারিণী কালীপুজোকে ঘিরে মেতে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু গ্রাম। প্রত্যেক বছর জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। পাঁশকুড়া থানার চৈতন্যপুর ২ অঞ্চলের তিনতাউড়ি বেগুনবাড়ির কালীপুজো এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী। এ ছাড়া এই অঞ্চলের গুলিখানাতেও সমারোহে চলে এই দেবীর আরাধনা।

বেগুনবাড়িতে কালীপুজো শুরুর কাহিনি আজও লোকমুখে ফেরে। এক সময় এই এলাকা কাশীজোড়া পরগনার রাজার অধীনস্থ ছিল। তখন রাজা রাজনারায়ণ রায়ের (১৭৫৬-১৭৭০) আমল। রাজার দুই বিশ্বস্ত লেঠেল হিনু ডাং এবং দিনু ডাং। এঁরা জাতিতে বাগদি। মাছ ধরা এঁদের কাজ হলেও এঁরা ডাকাতিও করতেন।

সেই সময় কলেরার মহামারি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তখন এই দুই ডাকাত মা কালীর কাছে মানত করেন যে, যদি তাঁদের সন্তানাদি কলেরামুক্ত হয়ে ওঠে, তবে তাঁরা ঘটা করে মায়ের পুজো করবেন। কিন্তু সন্তানরা সুস্থ হয়ে উঠলেও পুজোর খরচ তাঁরা জোগাড় করতে পারেননি। তখন বাধ্য হয়ে ডাকাতি করে অর্থসংগ্রহে নেমে পড়েন তাঁরা। এবং সেই অর্থ দিয়েই মা কালীর পুজো শুরু করেন। এর পর প্রতি বছর এই ভাবে ডাকাতি করে মায়ের পুজো চালাতে থাকেন জ্যৈষ্ঠের অমাবস্যাতে।

এ ঘটনা জানতে পারেন কাশীজোড়ার রাজা। তিনি দেবীর জন্য কিছু জমি দান করেন। ক্ষীরাই নদীর বুকে হওয়া এই পুজোর নাম হয় ‘তিনতাউড়ি বেগুনবাড়ির কালীপুজো’। এখন এটির পরিচালনা করেন বেগুনবাড়ি, সরাইঘাট এবং পাওবাঁকি গ্রামের মানুষজন। সম্প্রতি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে দেবীর মন্দির।

এই মন্দিরের ঠিক ১কিমি দূরেই আরেকটি গ্রাম গুলিখানা। ক্ষীরাইয়ের গর্ভে পাশাপাশি দু’টি ফলহারিণী কালী মন্দির এখানে। নদীর পাড়ে দাঁড়ালেই দেখা যায় মন্দির দু’টি। বেগুনবাড়ির সমসময়েই তৈরি হয়েছিল এই মন্দিরগুলি। দেবীর গলায় বাতাসা ও টাকার মালা ঝোলানো হয় দু’টিতেই। আর দুই এলাকার দেবীকেই বিসর্জন দেওয়া হয় পাশের কংসাবতী নদীতে।

এছাড়াও তমলুকের আস্তাড়া গ্রাম, পরমানন্দপুর, এগরার বাথুয়াড়িতে (১৫০ বছর) সমারোহে পূজিতা হন এই কালী। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার গাংচা এবং শ্রীরামপুর আটঘরাতেও জৈষ্ঠ মাসের ফলহারিণী কালীপুজো শতাধিক বছর ধরে চল‌ে আসছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja East Medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy