প্রতীকী চিত্র।
বেশিরভাগ সংবাদপত্র অমিল। মিলছে না তাই সঠিক সংবাদ। ফলে ছড়াচ্ছে গুজব। বেশিরভাগ সমাজ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ছে বলে অভিষোগ উঠছে। দিশাহারা মানুষ প্রশাসনের কাছে আবেদন করছেন সঠিক সংবাদ কোথায় পাবেন তা জানতে চেয়ে। কারণ, গত কয়েকদিন ধরে সংবাদপত্র হাতে পৌঁছচ্ছে না। কেন না, করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হকারদের প্রায় সকলেই কাগজ বিক্রি বন্ধ করেছেন।
স্মার্ট ফোনের দৌলতে অনেকেরই টিভি নির্ভরতা কমেছে। টিভি দেখার অভ্যাসও কমেছে অনেকের। সমস্যায় পড়েছেন সেই সব মানুষ। বৃহস্পতিবার সকালে হলদিয়ায় রটে যায় মঞ্জুশ্রীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছেন। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে পরে জানা যায়, সেখানে করোনা সংক্রামিত কেউ নেই। কিন্তু তার আগেই নাগরিকরা এই গুজবে দিশাহারা হয়ে একাধিক জায়গায় ফোন করেন। স্থানীয় একটি নার্সিংহোমের কর্মী দিব্যেন্দ্যু ঘোষ জানান, সকাল থেকে এরকম ফোন পেতে পেতে নাজেহাল অবস্থা। সমাজমাধ্যমে যে যা খুশি মন্তব্য করছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। তাঁর দাবি, ‘‘খবরের কাগজের সঙ্গে মানুষের নাড়ির সম্পর্ক। সঠিক খবর পেতে আমরা খবরের কাগজে উপরেই বেশি ভরসা করি। এখন কাগজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গুজব আরও বেশি ছড়াচ্ছে। বর্তমান অবস্থায় সে ক্ষেত্রে খবরের কাগজ চালু রাখতে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া দরকার।’’
হলদিয়ার দাসেরচকের বাসিন্দা তাহের আলি পেশায় চিকিৎসক। তিনি বলেন,‘‘এই সময়ে সংবাদপত্র আরও বেশি দরকার। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন সংবাদপত্রের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না। তা সত্ত্বেও কাগজ বন্ধ হয়ে যাওয়াটা গুজব ছড়ানোর রাস্তা আরও প্রশস্ত করল।’’ তিনি জানান, অনেকে তাঁর কাছে আসছেন করোনার ওষুধ নিতে। ফেসবুকে নাকি ওষুধের কথা বলা হয়েছে। এ ধরনের গুজব বন্ধ করতে পারে একমাত্র খবরর কাগজ। হলদিয়ার বাসিন্দা শিক্ষক সুজয় মাইতি বলেন, ‘‘এগরায় ঘুরে যাওয়া করোনা আক্রান্ত নাকি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই ধরনের খবর আসছে বারবার। এতে বাড়িতে থাকা বয়স্ক মানুষও বিভ্রান্ত হচ্ছেন। প্রশাসনকে গুজব রুখতে অবিলম্বে প্রচার করতে হবে। না হলে কেবল সন্দেহের বশে সমস্যা আরও বাড়বে।’’
হলদিয়ায় বেশ কিছু আবাসনের বাসিন্দারা খবরের কাগজ নেওয়া বন্ধ করেছেন করোনার জন্য। বন্দরের আই টি সেক্টরে কর্মরত সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘‘ভুল খবর বোঝা যায়। কিন্তু আতঙ্কে থাকা সাধারণ মানুষ হাতের কাছে সমাজ মাধ্যমে যা পাচ্ছেন তাই শেয়ার করছেন। গুজব আটকাতে এটা কমানোর পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘প্রশাসন গুজব রুখতে মাইকে প্রচারের ব্যবস্থা করুক। সেইসঙ্গে খবরের কাগজে চোখ রাখা দরকার।’’
হলদিয়ার উপ-পুরপ্রধান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে গুজবে কান না দিতে আমরা অনুরোধ করছি। আমরা জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন ছোট ছোট কমিটি করে প্রচার করছি।’’ মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সমাজ মাধ্যমে যাঁরা গুজব ছড়াচ্ছেন তাঁদের দিকে প্রশাসনের নজর রয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই সাইবার আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে আতঙ্ক বাড়ছে। তাই কিছু যাচাই না করে তা শেয়ার করা অনুচিত।’’
এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিটি ফোনকেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।’’ পুর পারিষদ ( স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ফোন করছেন। অনেক খবরের সত্যতা নেই। আমরা প্রতিটি ফোনকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। গুজবের ফোন না কমলে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরাও পরিশ্রান্ত হচ্ছেন।’’ খবরের কাগজ না আসাও গুজব ছড়ানোর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন এক চিকিৎসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy