— প্রতীকী চিত্র।
আড়াই বছর আগে উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির বসেছিল। সেই চিন্তন শিবিরের সিদ্ধান্ত মতোই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রায় বেরিয়েছিলেন। প্রথমে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর। তার পরে মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র। অথচ উদয়পুর চিন্তন শিবিরে কংগ্রেসের সংগঠনের হাল ফেরাতে যে সাত দফা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা অনেকাংশে এখনও রূপায়িত হয়নি।
কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল মেনে নিচ্ছেন, সাত দফা সিদ্ধান্তের মধ্যে চার দফা সিদ্ধান্তের রূপায়ণ হয়েছে। বাকি তিন দফা সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করতে হবে।বৃহস্পতিবার কর্নাটকের বেলগাভিতে কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসছে। সেখানে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক জোড়া প্রস্তাব পাশ হবে। কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, একশো বছর আগে এই বেলগাভিতে মহাত্মা গান্ধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসের অধিবেশন বসেছিল। সেই উপলক্ষে আয়োজিত এই বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কিছু ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্তও হবে। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন, সিদ্ধান্ত নিয়ে তার রূপায়ণ হতেই যদি আড়াই বছর গড়িয়ে যায়, তা হলে বৈঠক করেকী লাভ!
লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস আগের তুলনায় ভাল ফল করলেও হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে ভরাডুবি সংগঠনের মরচে ধরা দশা স্পষ্ট করে দিয়েছে। আঙুল উঠেছে কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপালের দিকে। রাহুল গান্ধীর ‘পরম আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত কেরলের এই নেতা গত পাঁচ বছর ধরে সংগঠনের দায়িত্বে। কংগ্রেসের একাধিক নেতার মতে, বেণুগোপালের আমলে কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতা চরমে উঠেছে। গত মাসে দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে খোদ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেছেন, দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা মেরামত করতে হবে। তার জন্য সাংগঠনিক রদবদল করতে হবে।
২০২২-এর মে মাসে উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এক পরিবার থেকে এক জনকেই টিকিট দেওয়া হবে। যদি না পরিবারের অন্য কেউ অন্তত পাঁচ বছর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকেন। এক ব্যক্তি দলের পদে পাঁচ বছরের বেশি সময় থাকবেন না। সংগঠনের সমস্ত স্তরে ৫০ শতাংশ সদস্যের বয়স ৫০ বছরের কম হতে হবে। কংগ্রেস সভাপতি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার জন্য উপদেষ্টা গোষ্ঠী তৈরি করবেন। সব রাজ্যে রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি তৈরি হবে। জনগণের মন বোঝা, নির্বাচন পরিচালনা ও কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য তিনটি আলাদা বিভাগ তৈরি হবে। সাংগঠনিক সংস্কারের জন্য টাস্ক ফোর্স তৈরি হবে। এর মধ্যে উপদেষ্টা গোষ্ঠী তৈরি, তিনটি আলাদা বিভাগ তৈরি ও টাস্ক ফোর্স গঠনের কাজ হয়নি। সব রাজ্যে রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটিও তৈরি হয়নি। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। অনেক ব্যক্তিই এক পদে পাঁচ বছরের বেশি সময় রয়েছেন। যেমন সাংগঠনিক সম্পাদকবেণুগোপাল স্বয়ং।
প্রশ্ন উঠেছে, সাংগঠনিক রদবদল কি বেণুগোপালকে দিয়েই শুরু হবে? এমনিতেও বেণুগোপাল ২০২৬-এ কেরলের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদে কংগ্রেসের মুখ হতে চাইবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। কংগ্রেসের একটা বড় অংশের মতে, সংগঠনের দায়িত্বে ফের রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতকে ফেরানো দরকার। গহলৌতেরআমলে কংগ্রেস একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছিল। গহলৌত হিন্দি বলতে পারেন। বেণুগোপালের সে ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। বেণুগোপাল নিজের দাবি, “কোথায় কী ধরনের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, কী ভাবে ভোটে দল ধাক্কা খেয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বেলগাভিতে নব সত্যাগ্রহ বৈঠকের পরে সাংগঠনিক পরিস্থিতির আপাদমস্তক পর্যালোচনা হবে।” তাঁর দাবি, ২০২৫ কংগ্রেসের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের বছর হতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy