কাঁধে-কাঁধ: দহিজুড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির দেখল বিনপুরের দহিজুড়ি গ্রাম। মৃত তরুণ চন্দের (৫৭) শববাহী বাঁশের খাটিয়ায় বুধবার কাঁধ দিলেন শেখ নাসিরুদ্দিন, শিবনাথ দে, সফিক খান, সুকুমার সিংহ, মেহবুব আলি, শেখ মুবারক-রা।
নাসিরুদ্দিন হলেন দহিজুড়ি অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি। সফিক পেশায় দর্জি, মেহবুব ও মুবারক রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে কিংবা দিনমজুরের কাজ করেন। সুকুমারের চায়ের দোকান। আর শিবনাথ খাবার দোকান চালান।
তরুণ আগে দহিজুড়ির একটি মিষ্টি দোকানে হালুইকর ছিলেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে স্ত্রী ও সন্তান বেশ কয়েক বছর আগে তাঁকে ছেড়ে চলে যান। স্থানীয়রা বার কয়েক তরুণের চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। ইদানীং মাটির ভাঙা ঘরে একাই থাকতেন তিনি। কোনওরকমে দিন চলত তাঁর। তরুণকে গত কয়েকদিন বাড়ির বাইরে বেরোতে দেখেননি পড়শিরা। মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশীরা দেখেন শুয়ে রয়েছেন তরুণ। ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় খবর দেওয়া হয় স্থানীয় এক চিকিৎসককে। তিনি তরুণকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই চিকিৎসক জানান, মঙ্গলবারই মৃত্যু হয়েছে তরুণের।
খবর পেয়ে তরুণের ছেলে রূপম, শ্যালক শিবনাথ দে-সহ কয়েকজন আত্মীয় এ দিন আসেন। পৌঁছে যান নাসিরুদ্দিন, মেহবুবরাও। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ খাটিয়ায় কাঁধ দিয়ে তরুণকে শ্মশানে নিয়ে যান। নাসিরুদ্দিন বলেন ‘‘দহিজুড়িতে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির নজির বহুদিনের। তরুণকাকার শেষযাত্রায় আমরা কাঁধ দিয়েছি। খই ছড়িয়েছি। চিতায় কাঠও দিয়েছি।’’ তরুণের শ্যালক শিবনাথ বলেন, ‘‘তরুণের সঙ্গে প্রায় দু’দশক আমার বোনের সম্পর্ক নেই। তবে নাসিরুদ্দিনরা আজ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাতে আমরা অভিভূত।’’ তরুণের ছেলে বছর কুড়ির রূপম বলেন, ‘‘খুব ছোটবেলায় বাবাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম। এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। উভয় সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় বাবার শেষকৃত্য হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy