জমি আন্দোলনের পরবর্তীতে অন্তরালে চলে যান বাম নেতা। ফাইল ছবি।
বাম জমানায় নন্দীগ্রামের সিপিআই বিধায়ক ছিলেন ইলিয়াস মহম্মদ। সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৪ বছর। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, তিন দিন আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সেখানেই মারা যান তিনি।
ইলিয়াস মহম্মদের জন্ম ১৯৫৮ সালের ১০ মার্চ নন্দীগ্রামের গোপীমোহনপুর গ্রামে। ১৯৭৮ সালে প্রথম বার নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন তিনি। ১৯৮৩ সালে নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। পরে ২০০১ ও ২০০৬ সালে টানা দু’বার সিপিআই-এর প্রতীকে নন্দীগ্রামের বিধায়ক হিসেবে জয়ী হন।
ইলিয়াসের আমলেই ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সূচনা। যদিও ইলিয়াসকে কোনও দিনই জমি আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে প্রকাশ্য সভায় দেখা যায়নি। আদ্যন্ত ভদ্র স্বভাবের ইলিয়াস সাধাসিধে জীবনযাপন করতেন। বামফ্রন্ট সরকার নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব করবে বলে জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। আর তাকে ঘিরেই চড়চড় করে বেড়েছিল উত্তেজনা। নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে দু’বার মারও খেয়েছিলেন ওই ইলিয়াস।
২০০৭ সালের শেষ দিকে নন্দীগ্রাম সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া সিনেমা হলের সামনে ইলিয়াসের ওপর চড়াও হয়েছিলেন জমি আন্দোলনকারীদের কয়েক জন। যদিও ওই ঘটনায় খুব একটা প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি ইলিয়াসকে। তবে তাঁর এই নিষ্ক্রিয়তা ভাল চোখে নেয়নি তৎকালীন বাম সরকার। এর পর ২০০৮ সালে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশনে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তবে ইলিয়াস দাবি করেন, নন্দীগ্রামের ওই পরিস্থিতিতে একটি এনজিও সেখানে উন্নয়নের কাজ করতে চেয়েছিল। আর সেই কাজের জন্য প্রয়োজন ছিল বিধায়কের একটি শংসাপত্র। সেটি নিতে এসেছিলেন শঙ্কুদেব পাণ্ডা। যিনি পরে তৃণমূল হয়ে এখন বিজেপি নেতা। তবে ওই ঘটনার জেরে ইলিয়াসকে বিধায়ক পদ থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেন দলীয় নেতৃত্ব। এর পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিজের পদত্যাগপত্র বিধানসভার তৎকালীন অধ্যক্ষ হাসিম আবদুল হালিমকে পাঠিয়ে দেন ইলিয়াস। তার পর থেকেই একেবারে অন্তরালে চলে যান এই বাম বিধায়ক।
ইলিয়াসের পরিবার সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। দিন তিনেক আগে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে আজ সকালে স্থানীয় বাম নেতারা ইলিয়াসের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy