তুলে ফেলা হচ্ছে রাস্তার পিচ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সরকারি পরিষেবা মানুষ ঠিকমত পাচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে অভাব-অভিযোগে শুনে সমস্যা মেটাতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছেন ‘দিদিকে বলো’। ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে সমস্যার সমাধান হয়েছে, এমন উদাহরণ রয়েছে। অথচ সেই পথে হেঁটেও সমস্যার সমাধান না হওয়ার নজির দেখা গেল পাঁশকুড়ার শিমুলহাণ্ডা এলাকায়।
নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা তৈরি হচ্ছে বলে ‘দিদিকে বলো’-তে অভিযোগ জানিয়েছিলেন অঞ্চলের বাসিন্দারা। কিন্তু অভিযোগ, তাতে বন্ধ হয়নি নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ। ফলে উপায় না দেখে স্থানীয় মানুষই বন্ধ করে দিলেন রাস্তার কাজ। পাশাপাশি তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘দিদিকে বলো’ র সুফল যদি নাই-ই মেলে তাহলে দিদিকে বলে লাভ কী?
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাঁশকুড়ার ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের নারান্দা বাইপাস থেকে শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার কাজ চলছে। মাইশোরা পঞ্চায়েত এলাকার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে কেশাপাট পঞ্চায়েতের গোঁসাইবেড় বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ প্রায় শেষ। গোঁসাইবেড় বাজার থেকে নারান্দা বাইপাস পর্যন্ত বাকি ৫ কিলোমিটার অংশে চলছে পিচ দেওয়ার কাজ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই অংশে অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে চলছে রাস্তার কাজ। মাসখানেক আগে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে তাঁরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন রাস্তার কাজ। মাস খানেক আগে ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে অভিযোগও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানেও সুরাহা না হওয়ায় এদিন এলাকার মানুষ বিক্ষোভ দেখান শিমুলহাণ্ডা এলাকায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার লোকজনকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা নতুন করা রাস্তার পিচের অংশ তুলে ফেলে। তাদের দাবি, নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির জন্য পিচের অংশ অল্প চলাচলেই উঠে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আনিশ খান বলেন, ‘‘ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি করছেন। আমরা ‘দিদিকে বলো’য় অভিযোগ করেও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করেছি।’’
জেলা পরিষদের সহকারী বাস্তুকার সৌমেন প্রসাদ মাইতি বলেন, ‘‘শুনেছি ওই এলাকার লোকজন রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ওঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আমি আগামীকাল ঘটনাস্থলে যাব।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে কেশাপাট পঞ্চায়েতের প্রধান দিলিপ সাঁতরা বলেন, ‘‘ওখানে অত্যন্ত নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা হচ্ছিল। আমি নিজে জেলা পরিষদে অভিযোগ জানিয়েছি। তবুও ঠিকাদার কথা না শুনে একইভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এলাকার মানুযের বিক্ষোভ সঙ্গত।’’
শাসক দলেরই পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের পাঁশকুড়ার নেতা সিন্টু সেনাপতি বলেন, ‘‘যে সরকার দলের নেতাদের কথাই শোনেনি, সেখানে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা বোঝাই যাচ্ছে। দিদিকে বলেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের আমলে মানুষ কতটা বঞ্চিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy