ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ব্যাপক ক্ষতি করেছে জেলায়। দিনভর উৎকন্ঠা নিয়ে হাসপাতালে কাটালেন কোভিড আক্রান্তরা। কোভিড হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও দুর্যোগের কারণে দৈনিক করোনা পরীক্ষা, টিকাকরণ প্রক্রিয়া থমকে রইল দিনভর। করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ শনাক্ত করার জন্য হাসপাতালে আসতে পারলেন না মৃতের পরিজন।
বুধবার কাকভোর থেকে জেলায় ইয়াসের তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়। দুর্যোগের সময় কোভিড হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য আগে থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মজুত করে রাখা হয়েছিল পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার। বিদ্যুৎ বিপর্যয় হবে ধরে নিয়ে হাসপাতালগুলি ডিজিটাল জেনারেটর চালানোর পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রাখা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কথা ভেবে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হলেও যে টুকু সমস্যা হয়েছিল তা সন্ধের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা গিয়েছে।
জেলার অন্যতম চণ্ডীপুর কোভিড হাসপাতালে বর্তমানে ১৮৫ জন কোভিড আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। বুধবার সকালে হাসপাতালে আসার পথে নরঘাটের কাছে রাস্তায় গাছ পড়ে আটকে যায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ভর্তি একটি গাড়ি। জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় গাড়িটিকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। মঙ্গলবার চণ্ডীপুর হাসপাতালে তিনজন কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের বাড়ি রামনগর এলাকায়। দুর্যোগের কারণে দেহগুলি শনাক্ত করার জন্য মৃত দু’জনের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসতে পারেননি বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় চালানো যায়নি মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ। অগত্যা মৃতদের পরিবারকে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে দেহগুলি শ্মশানে পাঠিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের কারণে দিঘার বৈদ্যুতিক চুল্লি জলে ডুবে যাওয়ায় তমলুকের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দেহ সৎকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। চণ্ডীপুর কোভিড হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পবিত্র জানা বলেন, ‘‘দুর্যোগের দিনে দেহ শনাক্ত করণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে হাসপাতালে পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে।’’
পাঁশকুড়ার বড়মা কোভিড হাসপাতালে এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছেন ১৭০ জন কোভিড রোগী। রোগীদের উৎকন্ঠা মেটাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদতের আত্মীয়দের মোবাইলে ভিডিয়ো কলিংয়ের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দেন। বড়মায় ভর্তি এক কোভিড আক্রান্তের কথায়, ‘‘আমার বাড়ি হলদিয়ায়। পরিবারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা হয়েছে। বাড়ির চারপাশে জল জমেছে দেখলাম। এই সময় হাসপাতালে আর মন টিকছে না।’’
দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে তিনদিনের অক্সিজেন মজুত করেছিল বড়মা কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার ভাস্কর রায় বলেন, ‘‘বাইরে দুর্যোগ চললেও হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় কোনও সমস্যা হয়নি। আত্মীয়দের সাথে কথা বলতে পেরে রোগীরাও খুশি।’’ পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১৭১ জন কোভিড আক্রান্ত। এদিন ১৫ জনের ছুটি হওয়ার কথা থাকলেও দুর্যোগের কারণে তা হয়নি।
হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘‘দুর্যোগের কারণে আজ কোভিড মুক্ত অনেককেই ছাড়া যায়নি। দুর্যোগ কমলে আগামীকাল তাঁদের ছুটি দেওয়া হবে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের কোনও পড়েনি কোভিড চিকিৎসায়। সমস্ত কিছুই স্বাভাবিক ভাবে চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy