Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Unknown Fever

Unknown fever: ছড়াচ্ছে গাঁ-গঞ্জেও, নজর জ্বরে

জানা যাচ্ছে, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:১০
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরেও জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও বাড়ছে। করোনা-কালে শিশুদের এই জ্বর নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকদের অনেকেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জ্বর নিয়ে নজরদারি শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রশাসনও। জানা যাচ্ছে, ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) এবং ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ (আইএলআই) উপসর্গযুক্ত শিশুদের ব্যাপারে নিয়মিত হাসপাতালগুলি থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘কিছু শিশুর জ্বর হয়েছে। এটা ভাইরাল ফিভারই। জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উপরেই নজর রাখা হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদার আশ্বাস, ‘‘শিশুদের জ্বর নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিকই রয়েছে।’’ তিনি মানছেন, ‘‘হাসপাতালগুলি থেকে নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কোথায় কত শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছে, সে সবই নজরদারির আওতায় রয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও জানাচ্ছেন, শিশুদের জ্বরের সঙ্গে করোনার কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত।

জানা যাচ্ছে, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘কিন্তু একসঙ্গে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে পড়েছে বা কোনও গ্রামে অনেকেই জ্বরে ভুগছে, এমন কোনও খবর আমাদের কাছে নেই।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন শিশু হাসপাতালগুলিতে ভর্তি হয়েছিল। দিন কয়েক হল, জ্বরের রোগী কমছে। আর এ সব ভাইরাসঘটিত জ্বর।’’ বাস্তব ছবিটা অবশ্য অন্য। জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলির অন্তর্বিভাগে, বহির্বিভাগে উপচে পড়ছে ভিড়। হাসপাতালগুলির শিশু ওয়ার্ডের শয্যা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শয্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নজরদারির আওতায় রয়েছে ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) উপসর্গযুক্ত শিশুরা। এআরআই কি? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এআরআই বলতে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা থেকে শুরু করে ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কুইলাইটাস, নিউমোনিয়াকে বোঝানো হয়ে থাকে। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বলা যায়।’’ এআরআইয়ের কিছু শিশু পাওয়া গিয়েছে যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নজরদারির আওতায় রয়েছে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ (আইএলআই) উপসর্গযুক্ত শিশুরা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনে’র সঙ্গে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি জ্বর ও কাশি থাকলে তা আইএলআই হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খোঁজখবর নিয়ে জানা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৪৬ জন শিশু। বৃহস্পতিবার ৯৪ জন ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে পিকু- তে রাখতে হয়েছে ৮ জনকে। বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতালেও এমন শিশুর আনাগোনা বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দ্বারিগেড়িয়ায় এসেছে ৬ জন, গড়বেতায় ৩৪ জন, কেওয়াকোলে ১০ জন, চন্দ্রকোনায় ১০ জন, ক্ষীরপাইয়ে ২ জন, বীরসিংহে ৩ জন, দাঁতনে ৪ জন, ডেবরায় ৩ জন, হিজলিতে ৩ জন। জেলার এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞও মানছেন, ‘‘এই সময়ে এআরআই, আইএলআই উপসর্গযুক্ত শিশুদের নজরে রাখাটা খুবই জরুরি।’’

শিশুদের জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ সম্পর্কে গাইডলাইন ঘোষণা করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তা জেলায় এসেছে। হাসপাতালগুলিতেও গিয়েছে। ওই নির্দেশিকায় আক্রান্ত শিশুকে পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি, তার ঘরোয়া চিকিৎসা এবং কী ভাবে বিপদের পূর্বাভাস বুঝে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, তা জানানো হয়েছে বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কিছু শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে কেউ কেউ।’’ তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘হাসপাতালে যারা এসেছিল, তাদের অনেকেই সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যে বাড়ি ফিরেছে। ভয়ের কিছুই নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Unknown Fever Health Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy