গাঁধী সঙ্কল্প যাত্রার প্রধান ব্যানারে দেখা গেল না গাঁধীর কোনও ছবি। মেদিনীপুরের কেরানিচটিতে। ছবি: কিংশুক আইচ
গাঁধীজি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বুধবার মেদিনীপুরে ‘গাঁধী সংকল্প যাত্রা’র সূচনায় এক ধাপ এগিয়ে তিনি দাবি করলেন, গাঁধীজির পথেই চলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘গাঁধীজি যা বলেছেন, মোদীজি তাই করে দেখাচ্ছেন। স্বচ্ছ ভারত অভিযান থেকে অহিংসার প্রচার তারই অঙ্গ।’’
সঙ্কল্প যাত্রার সূচনার আগে পূর্ব ঘোষণা মতো কর্ণগড়ের মহামায়া মন্দিরে পুজো হল। যাত্রাপথে মেদিনীপুরের গাঁধী মূর্তিতে বিজেপি নেতারা মালাও দিলেন। তবু পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। কারণ, পদযাত্রার সঙ্গে থাকা ট্যাবলো হোক বা মূল ব্যানার— সবকিছুতেই দেখা গেল, মোহনদাস কর্মচন্দ্র গাঁধীর চেয়ে বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। দীনদয়াল উপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, দিলীপ ঘোষেরা তো ছিলেনই, ছবি ছিল বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি শমিত দাস এবং স্থানীয় মণ্ডল সভাপতিরও। নেতারাও গাঁধীজির জীবন এবং তাঁর আদর্শের চেয়ে দলীয় কর্মসূচি প্রচারে বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
যা দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল ও কংগ্রেস। বিধায়ক তথা তৃণমুল নেতা দীনেন রায় বলেন, ‘‘গাঁধীকে শ্রদ্ধার নাম করে সাধারণ নেতাদেরই বেশি প্রচার হচ্ছে এই সঙ্কল্প যাত্রাতে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, ‘‘যাঁরা গাঁধীকে খুন করে হাত রাঙালো তাঁরাই এখন সঙ্কল্প যাত্রা করে অহিংসার বাণী শোনাচ্ছে!’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানের অভিযোগ, ‘‘মেদিনীপুর শহরের কয়েকটি ব্যানারে তো গাঁধীজীর ছবিই নেই। রয়েছে বিজেপি ও আরএসএস নেতাদের ছবি, যা গাঁধীজীকে অপমান করারই সামিল।’’ বিজেপির দাবি, গাঁধীজিকে সামনে রাখলেও এটা তো দলীয় কর্মসূচি ছিল। ছবির গুণতিতে যে গাঁধীজি পিছনের সারিতে রয়েছেন তা-ও মানতে নারাজ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সভাপতি শমিত দাসের দাবি, ‘‘গাঁধীকে সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি নিয়েছেন। গাঁধীকে সম্মান জানাতেই এই সঙ্কল্প যাত্রা। তাঁর কাট আউট, ছবি, বাণী দেওয়া ট্যাবলো সবই আছে। বিরোধীদের অভিযোগ সারবত্তাহীন।’’
এ দিন কর্ণগড়ের মন্দিরে পুজোর পর এ দিন সকালে মেদিনীপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শালবনির ভাদুতলায় ‘গাঁধী সঙ্কল্প যাত্রা’র সূচনা করেন দিলীপ। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত। দিলীপ জানান, সারা রাজ্যেই নৈরাজ্য চলছে। হানাহানি আর হিংসার অবসানে গাঁধীজির পথ আর মত আর পথ যে তাদেরও পথ তা-ও জানাতে ভোলেননি দিলীপ। এরপরই কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গাঁধীজির দেখানো পথেই চলছেন উদাহরণ সহযোগে তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
দিলীপ জানিয়েছেন, প্রতি লোকসভা এলাকায় মোট ১৫০টি পথসভা করার কথা থাকলেও মেদিনীপুর লোকসভা এলাকাতে ২১০ টি বা তার কিছু বেশি সভা করার লক্ষ্য রয়েছে তাঁদের। ১০ দিন ধরে চলা এই যাত্রা পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতে যাত্রা শেষ হবে। আগামী এক বছর সারা দেশে নানা কর্মসূচি নেওয়া হবে। রাজ্যে যা শুরু হল এ দিনই। এ দিন সংকল্প যাত্রায় ছিল আদিবাসী নৃত্য। জাতীয় পতাকা নিয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে বিজেপি কর্মীদের।
বিকেলে সঙ্কল্প যাত্রা খড়্গপুরে পৌঁছয়। পরে খড়্গপুরের ইন্দায় এক সভায় তৃণমূলকে একহাত নেন দিলীপ। শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে বলেন, ‘‘দিদিভাইয়ের এক মন্ত্রী কাঁথি থেকে রোজ আসেন খড়্গপুরে। শেষবেলায় পুলিশ অফিসারদের ধমকে-চমকে বাড়ি চলে যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy