Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
dilip ghosh

আদিবাসী ক্ষত উস্কে প্রতিশ্রুতি দিলীপের 

জঙ্গলমহলের উন্নয়ন, আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা দাবি করেন, এ দিন কার্যত তার উল্টো কথাই বলেছেন দিলীপ।

ঝাড়গ্রামে ‘অভিনন্দন যাত্রা’য় দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রামে ‘অভিনন্দন যাত্রা’য় দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৯
Share: Save:

জঙ্গলমহলের আদিবাসী সাঁওতাল, ভূমিজ, ও কুড়মিদের দাবিপূরণ হয়নি বলে দাবি করলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরে নয়া নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে অভিনন্দন যাত্রা কর্মসূচি ছিল বিজেপির। মিছিলে লোক হয়েছিল ভালই। যদি দিলীপ নিজে মিছিলে হাঁটেননি। তিনি ছিলেন হুডখোলা গাড়িতে। মিছিল শেষে পাঁচমাথা মোড়ে জনসভায় দি‌লীপ বলেন, ‘‘সাঁওতাল, ভূমিজ, কুড়মিদের বহুদিনের দাবিদাওয়া বাকি রয়েছে। সবাই তাঁদের কথা শুনেছে। এই সব মানুষজনকে ব্যবহার করেছে। তাঁদের কষ্টের কথা কেউ মনে রাখেননি। তাঁদের অধিকারও কেউ দেয়নি।’’

জঙ্গলমহলের উন্নয়ন, আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা দাবি করেন, এ দিন কার্যত তার উল্টো কথাই বলেছেন দিলীপ। বিগত কয়েক বছর ধরে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সংগঠনে ফাটল দেখা দিয়েছে। পঞ্চায়েত, লোকসভা ভোটে তার লাভ ঘরে তুলেছে বিজেপি। আদিবাসী ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা করেছে শাসক। আর বিজেপি চাইছে ক্ষোভ উস্কে দিতে। এ দিন দিলীপ প্রতিশ্রুতি দেন, ‘‘সাঁওতাল সমাজ, কুড়মি সমাজ তাঁদের নিজেদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। আমরাও তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে আছি। যেটা সম্ভব হবে কেন্দ্র থেকে করাবো। আর যেটা এখন সম্ভব হবে না, সেটা ২০২১ সালের পরে রাজ্যে বিজেপি-র সরকার হলে আমরা সেটা করাবো।’’

আদিবাসীদের অধিকারের প্রশ্নে দিলীপের সমালোচনা মানতে নারাজ শাসক দল। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘দিলীপবাবু চোখে ঠুলি পরে আছেন, তাই জঙ্গলমহলের উন্নয়ন দেখতে পান না। এ রাজ্যে আদিবাসী মূলবাসীদের কথা একমাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই ভাবেন। দিলীপবাবু ভুল তথ্য দিয়ে জঙ্গলমহলবাসীকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।’’ নয়া নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে কর্মসূচি। তাই দ্রুত সেই প্রসঙ্গে ঢুকেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। নিজেকে জঙ্গলমহলের ভূমিপুত্র হিসেবে তুলে ধরে বলেছেন, ‘‘সাঁওতাল, ভুমিজ, কুড়মিদের ভয় দেখানো হচ্ছে, তাঁদের নাকি এলাকা থেকে তাড়ানো হবে। এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দিলীপ বলেন, ‘‘আমি জঙ্গলমহলের ছেলে হয়ে বলছি, কারও সাধ্য নেই আপনাদের গায়ে হাত দেয়।’’ নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আন্দোলনকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি দিলীপ। এ দিনের কর্মসূচিতে দিলীপ ছাড়াও ছিলেন জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার-সহ রাজ্য নেতা-নেত্রীরা। দিলীপের মতোই রাজ্য নেতারা মিছিলে হাঁটেননি। নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে এ দিন ধর্মভিত্তিক বিভাজনের পক্ষেও সওয়াল করেন দিলীপ। বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছেন হিন্দু-মুসলমান ভাগ করছি। ঠিক করেছি। ’’

এ দিন সকালে খড়্গপুরে ছিলেন দিলীপ। বুধবার রাতে নারায়ণগড়ে কর্মসূচি সেরে তিনি চলে এসেছিলেন রেল বাংলোয় চলা তাঁর সাংসদ কার্যালয়ে। এ দিন সকালে বেরিয়েছিলেন প্রাতঃভ্রমণে। তার পরে সাউথসাইড এলাকায় একটি চায়ের দোকানে চা-চর্চায় বসে সিএএ নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নানা কথা বলেন দিলীপ। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এখন সিপিএমের পাঁচ-সাতজন বসে দেখাচ্ছে ওরা বেঁচে আছে। মানুষের বার্তা ওদের বোঝা উচিত।” তার পরেই দিলীপের মন্তব্য, “দিলীপ ঘোষ ওঁদের(বামফ্রন্ট) চিতা রচনা করছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy