Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

জ্বরে মৃত্যু, ১৪ ঘণ্টা দেহ পড়ে পোস্টমাস্টারের

শনিবার ডেবরার লোয়াদার বাকলসা শিবগ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল ছড়িয়েছে। দিন চারেক আগে শুভেন্দুর পরিজনেদের জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৫:২৯
Share: Save:

সাত দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন পোস্টমাস্টার। জ্বর কম থাকায় দিনচারেক আগে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় কর্মক্ষেত্রেও গিয়েছিলেন। দিন দু’য়েক আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতেই ছিলেন শুভেন্দুকুমার মাইতি (৫০)। শুক্রবার রাত একটা নাগাদ মৃত্যুর পরে করোনা সন্দেহে ১৪ ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে রইল ওই পোস্টমাস্টারের দেহ।

শনিবার ডেবরার লোয়াদার বাকলসা শিবগ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল ছড়িয়েছে। দিন চারেক আগে শুভেন্দুর পরিজনেদের জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়। শুভেন্দুর দাদা দীপক মাইতি হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক। প্রাথমিক ভাবে তিনিই ভাইয়ের চিকিৎসা করেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় শুভেন্দুকে। এরপর চিকিৎসকের ওষুধ ও পরামর্শ মেনে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। তবে শুক্রবার রাতে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে বাড়িতেই মৃত্যু হয় পোস্টমাস্টারের। ঘটনার পরে পাশে দাঁড়ায়নি পড়শিরা। পরিজনেদেরও মৃতদেহের কাছে যেতে নিষেধ করেন স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়াররা। ফলে গ্রামে ছড়ায় করোনা-আতঙ্ক। পরিজনদের দাবি— মৃতের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করা হোক। শুক্রবার রাত থেকে টানা ১৪ ঘণ্টা নিজের ঘরের বিছানাতেই নিথর দেহে পড়েছিলেন পোস্টমাস্টার। শেষমেশ শালবনি করোনা হাসপাতাল থেকে গাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হয়।

মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, চলতি মাসের ১০ তারিখ তিনি তমলুকের চনশ্বরপুর থেকে বদলি হয়ে পাঁশকুড়া স্টেশন উপ-ডাকঘরে পোস্টমাস্টারের দায়িত্ব পান। আগেও কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় করোনার আতঙ্কে মৃতদেহ উদ্ধারে গড়িমসি দেখা গিয়েছে। ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ফের স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের অমানবিক চেহারা সামনে উঠে এসেছে। মৃতের দাদা দীপককুমার মাইতি বলেন, “ভাইয়ের মৃত্যুর পর গ্রামের কেউ আমাদের বাড়িতে আসছেন না। আমরাও এখন চাইছি ভাইয়ের মৃতদেহের করোনা পরীক্ষা হোক। যদি করোনা পজ়িটিভ আসে, তবে আমাদের পরিবারের ১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। সকাল থেকে হাসপাতালের গাড়ির অপেক্ষা করে রয়েছি, কিন্তু গাড়ি আসছে না।’’

মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করছি।’’ শেষমেশ শনিবার বিকেলে অ্যাম্বুল্যান্সে প্রথমে ডেবরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শুভেন্দুর দেহ। সেখানে লালারসের নমুনা সংগ্রহের পরে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুরের মর্গে। দেহ উদ্ধারে বিকেল গড়িয়ে গেল কেন? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সকালে খবর পেয়েছি। করোনা সন্দেহ হওয়ায় সব প্রস্তুতি নিতে সময় তো লাগবেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

dead body coronavirus doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy