ফুঁসছে দিঘার সমুদ্র। — নিজস্ব চিত্র।
বিপদ আসছে। দিঘার সমুদ্রও কি সেই বার্তা দিচ্ছে? কারণ সোমবার সকাল থেকে ক্রমশই বদলে যাচ্ছে সমুদ্রের চেহারা। তা দেখে পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, সকলের মুখে একই প্রশ্ন— এখনই যদি সমুদ্রের এই চেহারা হয়, তা হলে ঝড়ের সময় কী হবে?
রবিবারের দিঘা ছিল অনেক শান্ত। তখন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংও স্থলভাগ থেকে ছিল অনেকটা দূরে। সমুদ্রে পর্যটকদের নামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন। কিন্তু বেলা বাড়তেই শান্ত সমুদ্রে নামে জনজোয়ার। কিন্তু এর পর যত সময় গিয়েছে ততই বদলে গিয়েছে দিঘার সমুদ্র। সোমবার সকাল থেকে দিঘার আকাশ মেঘলা। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও। যদিও দুপুরে বৃষ্টিতে কিছুটা ছেদ পড়ে। একইসঙ্গে পাল্টে গিয়েছে সমুদ্রের চেহারাও। জল হয়ে ওঠে উত্তাল। বেড়েছে ঢেউয়ের উচ্চতাও। একটা সময় সৈকত পেরিয়ে বোল্ডারে আছড়ে পড়তে শুরু করে ঢেউ। ইয়াসের সময় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল গার্ডওয়াল পেরিয়ে। অনেকের আশঙ্কা, সেই ভয়াল ছবি দেখা যাবে সিত্রাংয়ের ক্ষেত্রেও। এ সব ‘লক্ষণ’ দেখে পরিস্থিতি ‘ভাল’ বুঝছেন না দিঘার বাসিন্দা দয়াল মান্না। শঙ্কার সুরে তিনি বলেন, ‘‘কাল একে অমাবস্যার কটাল রয়েছে। তার উপর ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস যে কোথায় পৌঁছবে তা ভেবেই ভয় লাগছে।’’
দিঘায় এখন পর্যটকের সংখ্যা প্রচুর। সমুদ্রে নামার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, হোটেলে আশ্রয় নেওয়ায় বাধা নেই। সোমবার সমুদ্রে নামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সৈকতে কড়া নজর ছিল দিঘা, দিঘা কোস্টাল থানার পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। সমুদ্রের চেহারা বদলাতে দেখে সৈকতে ভিড় করেছিলেন পর্যটকেরা। তবে তাঁদের গার্ডওয়াল পেরোতে অনেক সময়েই বাধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিক এবং পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসাও বাধে পর্যটকদের একাংশের। কলকাতার মৌলালি থেকে দিঘায় যাওয়া মল্লিকা সরকার বলেন, ‘‘আমরা এর আগেও বহু বার দিঘায় এসেছি। তবে আজকের দিঘার চেহারা অনেকটাই আলাদা। সিত্রাংয়ের আশঙ্কায় প্রশাসনিক তৎপরতা চূড়ান্ত। কেউ গার্ডওয়ালে উঠলেই পুলিশ তেড়ে আসছে। সবার মধ্যেই একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে। সেই রোমাঞ্চ অনুভব করতেই দিঘায় এসেছি। তবে কোনও বিপদে পড়তে চাই না। ভালয় ভালয় পরিস্থিতি উতরে যাক এটাই কামনা করি।’’
হাওড়া থেকে যাওয়া পর্যটক স্বর্ণকমল দাস বলেন, ‘‘সমুদ্রে স্নান করব বলেই বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু’দিনের জন্য দিঘায় এসেছি। কিন্তু সমুদ্র যা উত্তাল তাতে জলের কাছেই ঘেঁষতে পারছি না। দিঘার ভয়ঙ্কর চেহারা দেখে মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছি। বছর খানেক আগেও দিঘায় ঘুরে এসেছিলাম। কিন্তু শীতের শুরুতে সমুদ্র সাধারণত যেমন শান্ত থাকে আজ তা নেই। প্রশাসনও বার বার মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। এ বার মনে হয় সমুদ্র স্নান না করেই ফিরে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy