ঝড়ে উড়ে গিয়েছে স্কুল ভবনের ছাউনি। নিজস্ব চিত্র
আমপানের তাণ্ডবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ধ্বংসের ছবি। ঘর ভেঙে, গাছ উপড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে জনজীবনই তছনছ হয়ে গিয়েছে। লকডাউনে বন্ধ থাকা স্কুলবাড়িগুলির অবস্থাও সঙ্গীন। ঝড়ের দাপটে ধ্বংসলীলা চলেছে সেখানেও।
ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে জেলার প্রায় দেড় হাজারের কাছাকাছি স্কুল বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই তালিকা অবশ্য চূড়ান্ত নয়। এখনও বহু স্কুল থেকে তথ্য আসেনি। চারটি চক্রের তথ্য আসেনি খবর। তার আগেই ক্ষয়ক্ষতির যা বহর তা রীতিমতো আশঙ্কার। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং টিচার ইনচার্জরা রিপোর্ট পাঠাতে শুরু করেছেন।
দেখা যাচ্ছে, বহু স্কুলেই জল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, মিড ডে মিলের পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বই-খাতা নষ্ট হয়েছে। ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার রুম, সাইকেল স্ট্যান্ড, সিঁড়ির ছাদ— সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। বহু স্কুলে মিড ডে মিলের চাল নষ্ট হয়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিল রান্নাঘর। বহু ক্ষেত্রে স্কুলের দরজা-জানলা ভেঙেছে, ভেঙেছে ছাদ, জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে মাটিতে পড়েছে, কোথাও আবার বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে স্কুলের গেট ভেঙেছে। সুতাহাটার গোবিন্দপুর জুনিয়র হাইস্কুলের টিচার-ইনচার্জ স্বর্ণালী পন্ডা বলছিলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের ফলে মিড ডে মিলের চাল জলে ভিজে গিয়েছে।’’ নন্দীগ্রামের আসদতলা বিনোদ বিদ্যাপীঠ স্কুল সূত্রে জানা খবর, স্কুলভবন নানা জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। ভেঙেছে স্কুলের প্রেক্ষাগৃহ। কোথাও প্রধান শিক্ষকের ঘর বিধ্বস্ত। জানলা ভেঙে জলে ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে কম্পিউটার, জলে ভিজেছে জেরক্স মেশিন।
এগরা স্বর্ণময়ী, মহিষাদল এস এস বিদ্যামন্দির, গয়েশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়, ময়না বালিকা বিদ্যালয়, সান্ত্বনাময়ী গার্লস হাইস্কুল, চন্দনপুর বীরেন্দ্র শিক্ষায়তন, নন্দনপুর নিমতলা হাইস্কুলগুলির ক্ষতি খুব বেশি বলে জানা গিয়েছে। হলদিয়া মহকুমার একটি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌরভকুমার ভুঁয়া বলছিলেন, ‘‘স্কুল দেখে মনে হল, ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করলাম।’’ আর বেশিরভাগ স্কুল চত্বরে আর গাছ অবশিষ্ট নেই বলে জানা গিয়েছে। শুধু সরকারি স্কুল নয়, বেসরকারি স্কুল ভবনগুলিও বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হলদিয়া, কাঁথি তমলুকের একাধিক বেসরকারি স্কুলের পরিকাঠামো ভেঙে তছনছ করেছে আমপান। মহিষাদলের অ্যাপেক্স অ্যাকাডেমি, হলদিয়া পুর পাঠভবনের মতো সবুজ স্কুলও কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষা করা যাবে কিনা তাই নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বেশ কিছু স্কুলে।
স্কুলে স্কুলে গাছেরও বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। হলদিয়ায় ভূপতিনগর ত্রিলোচনপুর হাইস্কুল চত্বরে তো শতাধিক গাছ লুটিয়ে পড়েছে। সেই গাছ চুরিও হচ্ছে দেদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy