—প্রতীকী চিত্র।
জামাইয়ের পাতে ইলিশ। দিতে পারলে শাশুড়ির মান। উল্টো ছবিও রয়েছে। সে ছবি দেখা যায়, জামাইষষ্ঠী বিষয়ক অলংকরণে। এক হাতে ইলিশ, অন্য হাতে মিষ্টির হাঁড়ি ঝুলিয়ে ধুতি-পাঞ্জাবি শোভিত স্মিতহাস্য জামাই চলেছে শ্বশুরবাড়ি। জামাই আপ্যায়নের এমন বার্ষিকীতে ইলিশ মানসম্মানের মাপকাঠি। এ বার কি ইলিশ বজায় রাখতে পারবে মান-মৎস্যের ভূমিকা? মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জামাইয়ের হাতে ও পাতে হয়তো ইলিশ থাকবে। কিন্তু তা এক বছরের পুরনো। এর কারণ সমুদ্রে মাছ ধরার ‘নিষিদ্ধ সময় পর্ব’।
এ বছর ১২ জুন জামাইষষ্ঠী। কিন্তু গত ১৪ এপ্রিল থেকে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। ১৫ জুন সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। তার আগে কোনও ভাবে গভীর সমুদ্রে রওনা দেবে না মাছ ধরার ট্রলারগুলো। দিঘা, শঙ্করপুর, শৌলা, পেটুয়া, নন্দীগ্রামে, কোলাঘাটে রূপনারায়ণের পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কয়েক হাজার ট্রলার। আবার বর্ষাও পুরোদমে শুরু হয়নি। ফলে ইলিশের মরসুমও সে ভাবে শুরু হয়নি। মাঝে দু'দিন পর মঙ্গলবারই জামাইষষ্ঠী। ফলে ইচ্ছে থাকলেও এ বছরে টাটকা ইলিশ জামাইয়ের পাতে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানাচ্ছেন মৎস্যজীবী এবং মাছ ব্যবসায়ীরা।
আশাহীনতার কথাই শোনালেন দিঘা মোহনা ফিশারম্যান অ্য়ান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণবকুমার কর। তিনি বলেন, "মাছ ধরা শুরু হয়নি। তাই জামাইষষ্ঠীতে টাটকা ইলিশের আমদানি হবেই না।’’ কাঁথির সুপার মার্কেটের মাছের আড়তদার প্রদীপ বর্মন বলেন, "এ মরসুমে এখনও মাছ তোলা শুরুই হয়নি। সবে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ট্রলার ফিরতে ঢের বাকি।" তা হলে উপায়? ভরসা সেই হিমঘরে মজুত করে রাখা গত বছরের ইলিশ। ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার পাঁচ-ছ’টি হিমঘরে নামখানা, ডায়মন্ডহারবার, দিঘার ইলিশ আছে। কিন্তু সেগুলো সবই গতবারের। এ বারের ইলিশ এখনও ধরাই শুরু হয়নি। ফলে জামাইষষ্ঠীতে বাজারে যে ইলিশ থাকবে, তা গতবারের ইলিশ।’’
ইলিশ সম্পর্কে যাঁরা খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা জানেন, পুবালি বাতাস আর ঝিরিঝিরি বৃষ্টি (ইলশেগুঁড়ি) হলেই জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে সমুদ্রের রুপোলি শস্য। সাধারণত বর্ষার মরসুমে নিম্নচাপ তৈরি হলে এই রকম আবহাওয়া তৈরি হয়। এখনও সে পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সেই আবহাওয়ার দিকেই তাকিয়ে মৎসজীবীরা। অপেক্ষায় ভোজনরসিক বাঙালিও।
ভোজনরসিক এবং ইলিশপ্রেমী এক জামাই পেশায় শিক্ষক তপনকুমার মান্না বলছেন, "ইলিশ-ইলিশই। ইলিশ হচ্ছে দার্জিলিংয়ের মতো। যে মরসুমে, যেমন আবহাওয়াই হোক, দার্জিলিং যেমন সবসময়ই সুন্দর, ইলিশও সে রকম। ভাপা, পাতুরি বা বেগুন দিয়ে পাতলা ঝোল, যে ভাবেই রান্না হোক, গন্ধ পেলেই জিভে জল এসে যায়। কোনও কিছু না ভেবে ইলিশটাকে শুধু উপভোগ করতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy