Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই মামলা সেই সিপিএম প্রার্থীর

মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক মিনিট আগেই দাসপুর-১ ব্লক অফিসে এসে লাইনের অপেক্ষা করেন সিপিএমের মহিলা প্রার্থী সুষমা সাউ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল     শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ০৮:০৪
Share: Save:

‘অনিচ্ছুক’ ঘোড়া দিয়ে বাজি জেতা সম্ভব!

মনোনয়ন জমায় সাফল্য। প্রত্যাহারেই বিপত্তি সিপিএমে। প্রার্থী চান মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে। দল চায় না। এ নিয়ে প্রবল অশান্তির পর এ বার দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে দাসপুর থানায় খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন সিপিএমের প্রার্থী সুষমা সাউ। বিস্তর নাটকের পরও শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করতে পারেনি সুষমা। অভিযোগ তো না হয় হল। কিন্তু এরপর কী? ভোটে লড়বেন তো? নিরুত্তর সুষমা। সিপিএম বলছে, এ সবই পুলিশ আর তৃণমূলের ‘নো‌ংরা’ খেলার ফল।

মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক মিনিট আগেই দাসপুর-১ ব্লক অফিসে এসে লাইনের অপেক্ষা করেন সিপিএমের মহিলা প্রার্থী সুষমা সাউ। ঘড়ির কাঁটায় তখন ২টো ৪০। নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বুড়ুলি সংসদের প্রার্থী হিসাবে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সুষমা। প্রত্যাহারের মুহুর্তেই সিপিএমের কর্মীরা সক্রিয় হন। ওই মহিলা প্রার্থীকে ব্লক অফিস থেকে নিয়ে আসার চেষ্টা চালান তাঁরা। এর পরই শুরু হয়ে যায় পুলিশ-সিপিএমের বচসা। একেবারে মহিলার শাড়ি ধরে টানাটানি করতেও দেখা যায়। পুলিশ মহিলাকে আটকানোর চেষ্টা করে। কাছাকাছি মহিলা পুলিশও তেমন ছিল না বলে অভিযোগ। ব্লক অফিস থেকে মহিলাকে টানাহ্যাঁচড়া করতে করতে পুলিশ ও সিপিএম কর্মীরা ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাস্তার উপরে এসে হাজির হয়। দাঁড়িয়ে যায় বাস-লরি। তার পরেও পুলিশ মহিলার সঙ্গে কথা বলার জন্য চেষ্টা চালায়। মহিলার মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য পুলিশের ওই ভূমিকার ভিডিয়ো (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ভাইরাল হয়।

সিপিএমের অভিযোগ, দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন, দল জানবে না, এটা হতে পারে না। তাদের অভিযোগ, তৃণমূল জোর করে তুলে এনেছিল। তাতে পুলিশের ভূমিকা ছিল, খবরের মাধ্যমে তা মানুষ দেখেছেন। দলের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ করা হবে। ওই সিপিএম প্রার্থী সুষমা অবশ্য বলছেন, “ আমি স্বেচ্ছায় এসেছিলাম। সিপিএম কর্মীরা জোর করে ব্লক অফিস থেকে বার করার চেষ্টা করেন। আমি পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলাম। তখনই পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করে।”

সময় পেরিয়ে যাওয়া মঙ্গলবার আর মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারেননি সুষমা। তবে ব্লক অফিস থেকে তিনি থানায় গিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের নাম লিখিত অভিযোগ করেন। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুণধর বসু এরিয়া কমিটির সম্পাদক গণেশ সামন্ত, দাসপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক অর্পণ সাহা, সিপিআই নেতা দেবজিৎ মুখোপাধ্যায় সহ মোট ছ’জনের নামে মামলা করেছেন। তাদের মধ্যে সিপিএম জোটের তিন জন প্রার্থীও রয়েছেন। খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, ছিনতাই-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে

ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “ দাসপুরের ঘটনায় ওই মহিলার অভিযোগে নির্দিষ্ট ভাবে মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নেতা তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুণধর বলেন, “ওই প্রার্থীকে জোর করে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পুলিশ আর তৃণমূলের নোংরা খেলা সবাই দেখেছেন। আমজনতা এর বিচার করবেন।”

বুধবার সুষমা তাঁর বুড়ুলির বাড়িতেই রয়েছেন। স্বেচ্ছায় লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। পারেননি। অভিযোগ করেছেন দলেরই কমরেডদের বিরুদ্ধে। তবে পদক্ষেপের কথা বললেও তা এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করেনি সিপিএম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE