—প্রতীকী চিত্র।
ভোট-যুদ্ধে রাম-বামের জোট নিয়ে সদা সরব রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ময়দানে কোলাঘাটে দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। ‘রাম’কে হারাতে জোট বেঁধেছে বাম-তৃণমূল। শুক্রবারই বিহারের পটনায় বিজেপিকে হারাতে বিরোধী জোটের বৈঠক হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে সিপিএমকে। পটনার ওই বৈঠকের আবহ কার্যত বহাল কোলাঘাটেও।
কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বোরডাঙ্গি গ্রামের ৯৬ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী মিতা পালের বিরুদ্ধে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি সিপিএম এবং তৃণমূল কেউই। বিজেপি প্রার্থীকে হারাতে ওই বুথে একযোগে নির্দল প্রার্থী অনিন্দিতা পালকে সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল ও সিপিএম। আর এই সমর্থনকে এলাকাবাসী ‘মহাজোট’ আখ্যা দিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। ওই বুথের নির্দল প্রার্থী অনিন্দিতা পাল দাঁড়িয়েছেন ‘আম’ চিহ্নে। তিনি বলেন, "এই বুথে গত পাঁচ বছরে বিজেপি কোনও উন্নয়ন করেনি। যে কোনও মূল্যে এলাকাবাসী বিজেপিকে হারাতে চায়। তাই তৃণমূল ও সিপিএম কার্যত জোটবদ্ধ হয়ে এখানে আমাকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করিয়েছে। দুই দলই আমার হয়ে প্রচার করছে।"
কিন্ত এমনটা কেন? প্রত্যন্ত একটি বুথে বিজেপিকে হারাতে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল-বাম ‘জোট’!
স্থানীয় সূত্রের খবর, ৯৬ বুথটি রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর এলাকা বলে পরিচিত। আগে ওই বুথটি বরাবর সিপিএমের দখলে ছিল। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৬ নম্বর বুথে জেতে বিজেপি। সে সময় বামেদেরই একটা বড় অংশ বিজেপিকে সমর্থন করেছিল বলে দাবি। তবে গত পাঁচ বছরে ধীরে ধীরে এলাকায় বামদের জমি আলগা হয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বও স্বীকার করছেন, এলাকায় তাঁদের সংগঠন দূর্বল। তাই বিজেপিকে সরাতে এই পন্থা। তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি অসীম মাজী বলেন, "বোরডাঙ্গি ৯৬ নম্বর বুথে আমরা সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল।দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়াই করে জয় আসবে না। তাই তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ওখানে লড়ছেন। সিপিএমও আমাদের সমর্থন জানিয়েছে।"
সিপিএম-তৃণমূল এক যোগে নির্বাচনী ময়দানে নামার বিষয়টি কীভাবে মেনে নিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব?
অসীমের দাবি, "মানুষের সার্বিক মতামতের কথা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। আমাদের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি। বিজেপিকে হারাতে এখানে সিপিএমের সমর্থন নিতে কোনও আপত্তি নেই বলে জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন।’’ অন্যদিকে, সরাসরি একযোগ হওয়ার কথা না বললেও প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে তৃণমূলের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া হয়েছে, তা মেনে নিচ্ছে সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ইব্রাহিম আলি বলেন, "অনিন্দিতা পাল আমাদের দলের সমর্থক। ওখানে সিপিএমের প্রতীকে লড়াই করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। তাই নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছেন। আর নির্দল প্রার্থীকে যে কোনও রাজনৈতিক দলই সমর্থন করতে পারে।’’
এভাবে অবশ্য তাঁকে হারানো যাবে না বলে জানাচ্ছেন এই বুথের বিজেপি প্রার্থী মিতা পাল। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে বিজেপি খুব শক্তিশালী। তৃণমূল এখানে প্রার্থী খুঁজে পায়নি। আমাকে হারাতে তাই তৃণমূল সিপিএমের হাত ধরেছে।" এলাকাটি রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বাড়ির কাছাকাছি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মৎস্যমন্ত্রীকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy