Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ভয় কাটছে না, অনীহা একশো দিনের কাজে

পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকাংশ ব্লকে গড় কর্ম দিবস বাড়াতে জবকার্ড প্রাপকদের কাজে সামিল করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পঞ্চায়েতগুলিকে।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০০:২৯
Share: Save:

লকডাউন চলাকালীন ১০০ দিনের প্রকস্পে কাজ করা যাবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র সরকার। সেই মোতাবেক রাজ্য সরকারের নির্দেশ‌ জেলায় জেলায় চালু হয়েছে একশো দিনের কাজের প্রকল্প। কিন্তু একসঙ্গে অধিক শ্রমিক কাজ করলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় অনেকেই কাজ করতে চাইছেন না। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকাংশ ব্লকে গড় কর্ম দিবস বাড়াতে জবকার্ড প্রাপকদের কাজে সামিল করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পঞ্চায়েতগুলিকে।

গত কয়েক বছর ধরে দেশের সেরা পঞ্চায়েত সমিতি নির্বাচিত হয়েছে রামনগর-১ ব্লক। সেখানে সক্রিয় জব কার্ড রয়েছে ১৬, ২১২ জনের। এমনিতে ওই ব্লকে ৯, ৭৩৯ জন এই প্রকল্পে কাজ করতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মাত্র ৬, ৫১৮ জন শ্রমিক কাজ করছেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। একই পরিস্থিতি কাঁথি-১ ও দেশপ্রাণ ব্লকে। সেখনকার বিডিও লিপন তালুকদার বলেন, ‘‘জব কার্ড থাকলেও করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই কাজ করতে চাইছেন না। একসঙ্গে মাঠে গিয়ে অনেক জনকে কাজ করতে হবে বলে ভয়ে তাঁরা কাজের জন্য আবেদনই করছেন না।’’

কাঁথি-৩ ব্লকের দইসাই গ্রামের যুবক বাবুলাল বেরা বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতাম। লকডাউনে কাজ বন্ধ থাকায় বাড়ি চলে এসেছি। তাই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জব কার্ড নিয়ে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু একসঙ্গে এত বেশি জন কাজ করলে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই কাজ করতে যাইনি।’’ কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকে সাড়ে তিন হাজার জব কার্ড প্রাপক আপাতত কাজ করছেন। এক্ষেত্রেও জব কার্ড হোল্ডার দের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কাজ দিতে হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

খেজুরি-২ ব্লকে ১১ হাজার জব কার্ড প্রাপক রয়েছে। এমনিতে ৬হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। আপাতত সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ৩ হাজার ২০০ জন শ্রমিক কাজ শুরু করেছেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার প্রায় সব ব্লকেই এক ছবি। করোনা সংক্রমণের ভয়ে জব কার্ড প্রাপকরা কাজ করতে চাইছেন না। তবে রামনগর-২ ব্লকে দেখা গিয়েছে অন্য ছবি। লকডাউন চলাকালীন এই ব্লকে ভিন রাজ্য থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। তাঁরাও কাজ চেয়ে আবেদন করেছেন। বিডিও অর্ঘ্য ঘোষ বলেন, ‘‘লকডাউন চলাকালীন প্রায় আড়াইশো জনকে নতুন করে জব কার্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে একশো দিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’’

অধিকাংশ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা সারা বছর এই প্রকল্পে কাজ করতেন, তাঁদের অনেকেই এখন করোনা সংক্রমণের ভয়ে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। ফলে সরকারি নির্দেশে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরি, পুকুর খনন এবং নিকাশি নালা সংস্কারের ক্ষেত্রে জব কার্ড ধারী শ্রমিক পাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, প্রতিটি ব্লকে যাতে সব শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন সে জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাঁদের করোনা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হচ্ছে।

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি ব্লক স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy