Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

অনলাইনে পড়া, কলেজের বহু পড়ুয়াই ভুগছেন

জেলায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ২১টি কলেজের কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের বেশ কিছু বিষয় অনলাইনে পড়ানো হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৩২
Share: Save:

লকডাউনে বন্ধ কলেজ। কিন্তু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পঠন-পাঠন চালু রাখতে হোয়াটসঅ্যাপে অনলাইন পঠন-পাঠন চালু করেছেন। তবে অনলাইনে পঠন-পাঠন পদ্ধতির সুবিধা সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীরা যাতে অনলাইন পঠন-পাঠনের সুবিধা পান সে বিষয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

জেলায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ২১টি কলেজের কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের বেশ কিছু বিষয় অনলাইনে পড়ানো হচ্ছে। কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজের এক অধ্যাপক জানান, বিজ্ঞানের অধিকাংশ বিষয় এবং বাংলা, ইংরেজির মতো সাহিত্যের একাধিক বিষয়ে অনলাইনে পড়ানো শুরু হয়েছে। যে সব পড়ুয়ার স্মার্টফোন রয়েছে তাঁদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন বিভাগীয় অধ্যাপকেরা। রামনগর কলেজে বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত বিষয় এবং দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ে ইতিহাসের মতো বিষয় অনলাইনে পড়ানো শুরু হয়েছে। কিন্তু এতে অসুবিধাও হচ্ছে। দেশপ্রাণ কলেজের পড়ুয়া অরিন্দম দেবনাথ বলেন, ‘‘বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই স্মার্ট ফোন কিনতে পারিনি। ফলে কী ভাবে অনলাইন পঠন-পাঠনের সুবিধা পাব তা বুঝতে পারছি না।’’

লকডাউনের মধ্যে অনলাইন পঠন-পাঠনে স্মার্ট ফোন থাকাটা জরুরি। অথচ অনেক ছাত্রছাত্রীরই স্মার্টফোন নেই বলে সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। তা ছাড়া লকডাউনের কারণে প্রান্তিক এলাকায় থাকা পড়ুয়াদের অনেকেই সময়মতো স্মার্টফোন রিচার্জ করতে পারছেন না বলেও জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন দেশপ্রাণ কলেজের টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি শেখ আবেদ খান। রামনগর কলেজের টিএমসিপির ইউনিট নেতা শতদল বেরা বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের কলেজ হওয়ায় অধিকাংশ পড়ুয়ার স্মার্ট ফোন নেই। অনলাইনে পঠন-পাঠন চালু হলে তাঁরা তা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবেন। সে ক্ষেত্রে লকডাউনের পরে কলেজে স্বাভাবিক ভাবে পঠনপাঠন শুরু হলে একই পাঠক্রম তখন ফের ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরতে হবে।’’

মেদিনীপুর কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ দুলালচন্দ্র দাস বলেন, “এপ্রিলের শুরু থেকেই আমাদের কলেজে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে।” সব পড়ুয়া কি ক্লাসে যোগ দিচ্ছেন? অধ্যক্ষ বলেন, “সকলে হোয়াটসঅ্যাপে সড়গড় নয়। তবে বেশিরভাগ পড়ুয়াই যোগ দিচ্ছেন।” কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া বলেন, “অনলাইনে ক্লাসে সকলে না যোগ দিলেও পড়ুয়াদের অনেকেই ওই ক্লাস করছে।”

সমস্যায় পড়েছেন অনেক অধ্যাপকও। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির অধ্যক্ষ সংগঠনের সম্পাদক ও কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দে বলেন, ‘‘অনলাইন পদ্ধতিতে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পঠন-পাঠনে সব পড়ুয়াদের যুক্ত করা যাচ্ছে না এ কথা ঠিক। তা ছাড়া অধ্যাপকদের একাংশও স্মার্টফোন নিয়ে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা জানিয়েছেন।’’

শুধু স্মার্টফোন নয়, যে সফটওয়্যার-এর মাধ্যমে পঠনপাঠনের বিষয়বস্তু হোয়াটসঅ্যাপে আপলোড করা হচ্ছে তাও মোবাইলে ঠিকমত খুলছে না বলেও পড়ুয়াদের একাংশ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্পেক্টর অব কলেজ অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘লকডাউনেও ছাত্রছাত্রীরা যাতে পাঠক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন সে জন্যই কিছু কিছু কলেজে অনলাইনে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। তবে স্মার্টফোন নিয়ে পড়ুয়া, অধ্যাপকদের যে সমস্যা রয়েছে সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই।’’ তিনি জানান, কলেজে পঠনপাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এলে এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy