ধান কেটে ঘরে তোলার তোড়জোড়। দাসপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
কয়েকদিনের বৃষ্টির জল এখনও চাষের জমিতে জমে রয়েছে। এরমধ্যে আবার শোনা যাচ্ছে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তাই জমিতে যা ধান আছে দ্রুত কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর। সবমিলিয়ে করোনা ও ঝড়-বৃষ্টির আবহে বোরো ধানে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাঁদের ক্ষোভ, দ্রুত ধান কাটতে বলা হলেোও সেটা কী ভাবে সম্ভব তার উত্তর মিলছে না।
এ বার বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছিল। তাই লকডাউনের মধ্যেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ধান কাটা শুরু করে দিয়েছিলেন চাষিরা। বোরো ধান মাঠ থেকে তোলার জন্য মূলত হার্ভেস্টার যন্ত্রের উপর নির্ভর করেন চাষিরা। কিছু ক্ষেত্রে কাস্তে দিয়েও ধান কাটা হয়। এ বার করোনাসংক্রমণের ভয় ও লকডাউনেরজন্য যন্ত্রের ব্যবহার সেভাবে হচ্ছিল না। তার মধ্যেই এল সতর্কবার্তা। কৃষি দফতরের সহ অধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “চাষিদের অ্যামফুন ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ধান কেটে ফেলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”
তথ্য বলছে, চলতি মরসুমে পশ্চিম মেদিনীপুরে ২ লক্ষ ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়-বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৪৫ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাকি ধানের বেশিরভাগই জমিতেই রয়েছে। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা(শস্য সুরক্ষা) দেবকান্ত পান্ডা মানছেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ৭০ শতাংশ ধান মাঠেই নষ্ট গিয়েছে।
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে অথবা মে মাসের প্রথমে ওই ঘূর্ণিঝড় বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে। এত কম সময়ের মধ্যে ধান কাটা কী করে সম্ভব সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছেন চাষিরা। কারণ হার্ভেস্টার যন্ত্র মূলত ভিন্ রাজ্য বা ভিন্ জেলা থেকে আসে। লকডাউনের মধ্যে জমিতে ওই যন্ত্র নামানোর বিষয়ে ধান কাটার শুরু থেকেই কড়া মনোভাব নিয়েছিল প্রশাসন। চাষিরা ভরসা করছিলেন মজুরের উপরে। কিন্তু একসঙ্গে বেশি মজুর এখন পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও একসঙ্গে অনেকে জমিতে কাজ করলে সামাজিক দূরত্ব না মানার অভিযোগ উঠতে পারে। তাই চাষিদের অনেকেই সতর্কবার্তা শুনেও চোখের সামনে ক্ষতি দেখা ছাড়া উপায় নেই বলে আক্ষেপ করছেন। তাঁদের ক্ষোভ, কৃষি দফতর সব বুঝেও শুধু সতর্কবার্তা দিয়েই দায় সারছে।
তবে জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘আমরা চাষিদের অবস্থা বুঝতে পারছি। জরুরি ভিত্তিতে কিছু যন্ত্র যাতে জমিতে নামানো যায় সেই চেষ্টা চলছে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy