যেটুকু বায়না এসেছে। পটাশপুরে।
ফিরেছে লকডাউনের স্মৃতি। বন্ধ হয়েছে পুজো-পার্বণ। তাতে কাজ হারিয়ে ফের আর্থিক সঙ্কটে এগরা মহকুমা এলাকার প্রতিমা শিল্পীরা।
বৈশাখ থেকে আষাঢ়— এই তিন মাস হিন্দু মতে নানা দেব-দেবীর পুজো হয়। বিভিন্ন ক্লাব, বাড়িতে এই সময় আয়োজন করা হয় মনসা পুজো থেকে নীল সরস্বতী, শীতলা পুজোর। সেই সব প্রতিমা তৈরির বায়না আসত এগরার শ্রীপুর, কুদি, কসবা এগরা, পটাশপুরের পালপাড়া, পরশুরামপুর, ভঞ্জেরপুকুর এলাকার মৃৎ শিল্পীদের কাছে। বরো ধান কাটার শেষে প্রতিমা তৈরির জন্য শিল্পীরা মাটিও সংগ্রহ করে নিতেন। পরে বায়না মতো প্রতিমার কাঠামো তৈরিতে শিল্পীরা ব্যস্ত থাকতেন।
এ বছরের শুরুতে করোনা নিয়ে কড়াকড়ি কার্যত ছিল না। পুজো ও ধর্ম অনুষ্ঠানে জমায়েতর উপরও নিষেধাজ্ঞা করেনি প্রশাসন। কিন্তু মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতি জটিল হওয়ার কারণে বর্তামনে রাজ্যে কার্যত লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। গোটা মে মাস ধরে পালন করা হবে কড়া বিধিনিষেধ। রাজ্য সরকারের বিধি নিষেধ জারি হতেই বেশির ভাগ ক্লাব, বিভিন্ন সংস্থা এবং পারিবারিক পুজো সাময়িক ভাবে বন্ধ বা স্থগিত করেছে। ফলে কুমোর পাড়ায় আর আগের মতো প্রতিমার তৈরির বায়না আসছে না। একই অবস্থা তৈরি হয়েছিল গত বছ লকডাউন শুরুর সময়েও। কুদির এক ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘‘এই সময় মনসা পুজো উপলক্ষে আমাদের এলাকায় আট দিনের মেলা বসত। লকডাউনের কারনে সব বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতিমা তৈরির বরাতও বাতিল করা হয়েছে।’’
মৃৎ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, আগে সপ্তাহে যেখান তিন থেকে সাতটে প্রতিমা তৈরির বায়না আসতো। সেখানে গত একপক্ষ কাল ধরে একটি করেও প্রতিমা তৈরির বরাত আসছে না। মাসে যে কয়েকটি বরাত আসছে, সেগুলিও অল্প বাজেটের। ফলে লাভ কম হচ্ছে। আগে প্রতি মাসে যেখানে এক লক্ষ টাকার উপর প্রতিমা তৈরি হতো। এবারে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে না। এক প্রকার কাজ বন্ধে আর্থিক সমস্যা বাড়েছে মৃৎ শিল্পীদের। মদন পাল নামে এক প্রতিমা শিল্পী বলছেন, ‘‘লকডাউনে হাতে কাজ নেই। যাঁরা প্রতিমা তৈরির বরাত দিয়েছিলেন, কার্যত লকডাউন শুরু হওয়ায় তা বাতিল করে দিয়েছেন। মাসে মাত্র এক-দুটি প্রতিমা তৈরির বরাত আসছে। অন্যদিকে, প্রতিমা সজ্জার সামগ্রীর দাম বেড়েছে। কাজ না থাকায় সংসার চালানোই দুষ্কর হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy