Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

মেডিক্যালের ওয়ার্ড ১২ ঘণ্টা অক্সিজেন শূন্য

বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘন্টা অক্সিজেন ছিল না ওয়ার্ডে।

মেডিক্যালে যাচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার।

মেডিক্যালে যাচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৫:২৩
Share: Save:

একটি ওয়ার্ডে অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ডে কয়েকজন করোনা সংক্রমিতও ভর্তি রয়েছেন। উপসর্গ শ্বাসকষ্টের। অথচ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হুঁশ নেই বলে অভিযোগ।

জানা যাচ্ছে, প্রায় ১২ ঘন্টা অক্সিজেন-শূন্য থাকল মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ওয়ার্ড। রোগীর পরিজনেদের জানানো হল, পারলে বাইরে থেকে সিলিন্ডার নিয়ে আসুন। জেলার সব থেকে বড় সরকারি হাসপাতালের এমন ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। এক রোগীর পরিজন বলছিলেন, ‘‘এখানেই এই অবস্থা। তাহলে গ্রামীণ হাসপাতালগুলি কী ভাবে চলছে, বোঝা যাচ্ছে।’’

হাসপাতালের নতুন ভবনে মেডিসিনের এই ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ১৪ জন রোগী। এর মধ্যে কয়েকজন করোনা সংক্রমিত। জানা যাচ্ছে, বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘন্টা অক্সিজেন ছিল না এই ওয়ার্ডে। হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত রাখতে যেখানে এত বৈঠক, এত আলোচনা, তাও এই পরিস্থিতি কেন? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলায় অক্সিজেনের কোনও সঙ্কটই নেই। তবে ওই ওয়ার্ডের সমস্যা মানছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আসলে ওই ওয়ার্ডে পাইপলাইন অক্সিজেন নেই। তাই সমস্যা হয়েছে। রাতের বেলায় সমস্যাটা হয়েছিল। পাইপলাইন থাকলে সুবিধা হত।’’ মেডিক্যালেও অক্সিজেনের সমস্যা কেন? অধ্যক্ষের জবাব, ‘‘ডি-টাইপ সিলিন্ডার আমাদের রয়েছে। বি- টাইপটাতেই সমস্যা কিছু হচ্ছে। বি- টাইপ কিছু কেনা হয়েছে। আরও কিছু কিনতে হবে। তবে চাইলেই তো সি এখন লিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না।’’

ওয়ার্ডে অক্সিজেনের সমস্যার কথা জানতে পেরেছিলেন সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা। অভিযোগ, তিনি দ্রুত পদক্ষেপ করেননি। ওই ওয়ার্ডের এক নার্স মেনেছেন, ‘‘পর্যাপ্ত অক্সিজেনের জোগান নেই। বুধবার বিকেল থেকেই অক্সিজেন ছিল না ওয়ার্ডে। এ দিন সকালে এসেছে।’’ সমস্যার কথা সুপারকে জানিয়েছিলেন? ওই নার্স বলেন, ‘‘আমরা সরাসরি সুপারকে জানাতে পারি না। আমরা যেখানে জানানোর জানিয়েছি। সুপার নিশ্চয়ই জানতে পেরেছিলেন।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘স্যররা (হাসপাতালের আধিকারিকেরা) বলেছিলেন, ‘অক্সিজেন আসছে, রাস্তায় আছে’। রোগীর পরিজনেদের বাইরে থেকে অক্সিজেন কিনে আনতে বলা কেন? ওই নার্সের বক্তব্য, ‘‘এখানে ছিল না। তাই আমরা বলেছিলাম, যদি ব্যবস্থা করতে পারেন, তাহলে নিয়ে আসবেন।’’

মেডিক্যালের এই সমস্যার কথা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে প্রশাসন। সূত্রের খবর, জেলাশাসক রশ্মি কমলের নির্দেশে বৈঠক ডাকেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পিনাকীরঞ্জন প্রধান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর দফতরেই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু, হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা প্রমুখকে। কেন ওয়ার্ডটি অক্সিজেন- শূন্য হয়ে পড়ল, তা জানতে চান অতিরিক্ত জেলাশাসক। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের স্বীকারোক্তি, অক্সিজেন সিলিন্ডার আসতে দেরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, মেদিনীপুর মেডিক্যালে দিনে দুই রকমের মিলিয়ে গড়ে ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হত। এখন চাহিদা খানিক বেড়েছে। মেডিক্যালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘প্রচুর রোগী এখানে চলে আসছেন। আমরা রোগীদের অন্য কোথাও পাঠাতেও পারছি না। নেগেটিভ আসছে, পজ়িটিভও আসছে। রোগী কমলে ভাল হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Midnapore Medical College COVID-19 coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy