Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Midnapore Medical College

পাশে রাজ্য, অক্সিজেন প্ল্যান্ট পাচ্ছে মেডিক্যাল

কর্পোরেশনের তরফে ইতিমধ্যে একটি সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২১ ০৪:২৯
Share: Save:

কেন্দ্রীয় প্রকল্প স্থগিত হয়েছে। পাশে থাকছে রাজ্য। রাজ্যের সহায়তায় ‘লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট’ হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জেলার মধ্যে একমাত্র মেদিনীপুর মেডিক্যালেই এই প্ল্যান্ট হচ্ছে। সহায়তায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন’।

সূত্রের খবর, কর্পোরেশনের তরফে ইতিমধ্যে একটি সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ওই সংস্থাকে নির্দেশিকা ধরানো হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা জানানো হয়েছে। নির্দেশিকার প্রতিলিপি পৌঁছেছে জেলাশাসকের দফতর, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর, হাসপাতাল সুপারের দফতরে।

রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট খুব শীঘ্রই হবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।’’ কেন্দ্রীয় প্রকল্প স্থগিত হওয়ার পর চিকিৎসকদের অনেকে নিরাশ হয়েছিলেন, রাজ্যের প্রকল্প রূপায়িত হবে শুনে তাঁরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ কমতে শুরু করলেও নভেম্বর- ডিসেম্বরের দিকে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত করাটা খুব জরুরি। এটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’

কেন্দ্রীয় সংস্থার সহায়তায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল সহ জেলার ৫টি সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। প্ল্যান্ট বসলে হাসপাতালগুলি অক্সিজেনের ব্যাপারে স্বনির্ভর হতে পারত বলেই জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি ছিল। ঠিক ছিল, জেলায় ৬টি প্ল্যান্ট গড়া হবে। এর মধ্যে ২টি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ১টি করে। হাসপাতালগুলিতে প্ল্যান্টের জন্য জায়গা দেখে রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্ল্যান্টের কাজ এগোয়নি। কেন? জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলায় অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি যে কেন্দ্রীয় সংস্থার বসানোর কথা ছিল, তারা জানিয়ে দেয় যে, তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় আপাতত এ জেলার কোনও প্রকল্প নেই। স্বভাবতই জেলায় প্রস্তাবিত কোনও প্ল্যান্টের কাজই এগোয়নি। এ নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে চাপানউতোরও হয়েছে। বিভিন্ন মহলের মতে, কেন্দ্র- রাজ্য সংঘাতের জেরেই সার্বিকভাবে এ রাজ্যে প্রকল্পের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তার আঁচ পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।

মেডিক্যালে যে প্ল্যান্ট হওয়ার কথা ছিল এবং যে প্ল্যান্ট হতে চলেছে, দু’টোর মধ্যে অবশ্য ফারাক রয়েছে। কেমন? হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে প্ল্যান্ট হওয়ার কথা ছিল তার পোশাকি নাম ‘প্রেশার সুইং অ্যাডসর্পশন’ সংক্ষেপে পিএসএ। এ ক্ষেত্রে বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ হয়। সংগৃহীত অক্সিজেন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বিশেষ ট্যাঙ্কে মজুত হয়। প্রয়োজন মতো সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে হাসপাতালের ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। ট্যাঙ্কে মজুত অক্সিজেন যত ব্যবহার হয়, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা তৈরি হয়ে ভরে যেতে থাকে প্ল্যান্টের ভাঁড়ার। এ ক্ষেত্রে বাতাস থেকে সংগৃহীত অক্সিজেন প্রক্রিয়াকরণের পর ট্যাঙ্কে মজুত হয়। অন্যদিকে, ‘লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট’- এর ক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক থাকে। সেই ট্যাঙ্কে তরল অক্সিজেন এনে মজুত করা হয়। তরল অক্সিজেনকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে গ্যাসে পরিণত করা হয়। পরে প্রয়োজন মতো সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে হাসপাতালের ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এ ক্ষেত্রে যেমন পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করা যেতে পারে, তেমন খালি সিলিন্ডারেও ভর্তি করা যেতে পারে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউ নিম্নমুখী হলেও তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দিনে অক্সিজেনের জোগান যথেষ্ট থাকা প্রয়োজন। লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে উঠলে হাসপাতালের অক্সিজেন- পরিকাঠামোর অনেকটাই উন্নতি হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy