প্রতীকী ছবি।
করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলার শালবনি করোনা হাসপাতালে (লেভেল ৪) শুক্রবার সকালে গোপাল ঘোড়ই (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তিনতলায় একটি কেবিনের পাশে। জানলার লোহার রডে গলায় গামছার ফাঁসে ধুলছিল দেহটি। মৃত ব্যক্তির বাড়ি খড়্গপুর গ্রামীণের সুলতানপুরে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই করোনা রোগী আত্মহত্যা করেছেন। যদিও তা মানতে নারাজ মৃতের ছেলে ও মেয়ে। বাবার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তাঁরা ঘটনার যথাযথ তদন্ত দাবি করেছেন। মৃতের ছেলে পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি বলেন, ‘‘বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন না। বাবার সুগার ছিল, পায়ের ক্ষত সংক্রমিত হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাই হচ্ছিল না। পায়ে ভর দিয়ে হাঁটার ক্ষমতাও ছিল না। তা হলে কী ভাবে বাবা দোতলা থেকে তিনতলায় গিয়ে আত্মহত্যা করলেন? মনে হয় বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সঠিক তদন্তে বোঝা যাবে।’’
গোটা ঘটনায় শালবনি করোনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুখে কুলুপ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘রোগীর মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। নিয়মমাফিক ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কি ওই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত হবে? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের জবাব, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে যে পদক্ষেপ করার করা হবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, "বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।"
পেশায় কৃষক গোপাল ঘোড়ই পায়ে ক্ষত নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কিছুদিন আগে। সেখানেই তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তারপর ১২ অগস্ট গোপালকে শালবনির করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী তিনতলায় একটি কেবিনের পাশে জানলার লোহার রডে গলায় গামছা বাঁধা অবস্থায় গোপালের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। আসে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে মেদিনীপুরে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ঘটনায় এই করোনা হাসপাতালের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
গোপালের ছেলের করোনা রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছিল। তাঁর চিকিৎসা চলছিল মেদিনীপুরের আয়ুষ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে সুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সুলতানপুরের বাড়িতে ফিরেছিলেন। আর শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে বাবার মৃত্যুসংবাদ পান তিনি।
শালবনির ওই হাসপাতালে কম রোগী নেই। ২০০ শয্যার হাসপাতালে বৃহস্পতিবার ১৫২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এর মধ্যেই কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, প্রশ্ন উঠছে। আগেও এই হাসপাতালের রক্ষীদের নজর এড়িয়ে এক করোনা রোগী নিখোঁজও হয়েছিলেন। পরে তাঁর খোঁজ মিলেছিল শালবনি বাজার এলাকার পাশে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy