প্রতীকী ছবি।
ফের করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সংক্রমণ রোখার নির্ভরযোগ্য উপায় হল টিকাকরণ। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও টিকাকরণের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে ‘সেশন সাইট’ (টিকাকরণ কেন্দ্রের সংখ্যা)।
জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘টিকাকরণ কর্মসূচিতে আরও গতি আনার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দেড় থেকে দু’মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়। করোনার সংক্রমণ কমবে, নাকি করোনা ফের ‘রাজত্ব’ করবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছে এই সময়ের উপরে।
জেলায় দু’দফার ভোট মিটতেই গত সোমবার বৈঠকে বসেছিল করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্স। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল ও অতিরিক্ত জেলাশাসকেরাও। টিকাকরণ কর্মসূচির গতিপ্রকৃতি নিয়ে পর্যালোচনা হয় সেখানে। দেখা যায়, স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধাদের টিকাকরণের হার ভাল হলেও বয়স্কদের টিকাকরণের হার প্রত্যাশিত নয়। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকও মানছেন, ‘‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে টিকাকরণের হার প্রত্যাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। প্রতিষেধক নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তাই কাউকে জোর করাও যাচ্ছে না। আমরা বোঝাচ্ছি। নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছি।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিমারির এক বছরের মাথায় ক্রমশ করোনাবিধি মানার ক্ষেত্রে জনমানসে অনীহা দেখা দিতে শুরু করেছে। এরফলেই বাড়ছে সংক্রমণ। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘সর্বত্র কিছু মানুষের মধ্যে প্রতিষেধক না- নেওয়ার প্রবণতা থাকে। এরমধ্যেও আমাদের লক্ষ্য ছুঁতে হবে। জেলায় প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
জেলায় অবশ্য প্রতিষেধকের কোনও অভাব নেই। টাস্কফোর্সের ওই বৈঠকে দেখা যায়, জেলায় ওই দিন পর্যন্ত কোভিশিল্ডের ৩,০১,৫০০ ডোজ এসেছে। ব্যবহৃত হয়েছে ২,৪৯,৩৮৫ ডোজ। কোভ্যাক্সিনের ৩২,৯৬০ ডোজের মধ্যে ২৪,২৭৯ ডোজ ব্যবহৃত হয়েছে।
এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের উপ- স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও টিকাকরণ হচ্ছে। বয়স্কদের সুবিধার্থেই এই উদ্যোগ বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। দফতরের দাবি, এরফলে টিকাকরণের হার বাড়ছেও। জানা গিয়েছে, এখন জেলা জুড়ে ২৭২টি ‘সেশন সাইট’ অর্থাৎ টিকাকরণ কেন্দ্র রয়েছে। টিকাকরণের সূচনায় জেলায় মাত্র ১৩টি ‘সেশন সাইট’ নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।
এখন জেলার বেশিরভাগ উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সোমবার এবং শুক্রবার টিকাকরণ হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত সোমবার গড়বেতার ৮টি, গোয়ালতোড়ের ৯টি, মেদিনীপুরের (সদর) ৭টি, কেশপুরের ১৩টি, শালবনির ৬টি, সবংয়ের ১০টি, কেশিয়াড়ির ৬টি, নারায়ণগড়ের ১৪টি, মোহনপুরের ৫টি উপ- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ হয়েছে। জেলার ২৭২টির মধ্যে ওই দিন ২৬১টি ‘সেশন সাইটে’ ৪৫- ৫৯ বয়সী ১৭,৫৭৯ জন ও ষাটোর্ধ্ব ১০,৮৬৫ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
কেন্দ্রের অবশ্য নির্দেশ রয়েছে, শনি-রবিবারের মতো সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারি ছুটির দিনেও টিকাকরণ কেন্দ্র খোলা রাখতে হবে। টিকাকরণের হার বাড়াতে অন্তত আগামী এক মাস সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি বাতিল করে টানা টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy