প্রতীকী ছবি।
পরিযায়ীদের সূত্রে আক্রান্ত বাড়ছেই। উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে মৃত্যু।
ঘাটাল মহকুমায় নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি দাসপুরের বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে। মৃত্যুর পরে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ২ জুন মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে তার পরে। আক্রান্ত ও মৃত পাঁচজনই পরীযায়ী শ্রমিক। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ঘাটাল মহকুমায় নতুন করে মোট চার জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। মেদিনীপুর করোনা হাসপাতালে এক আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পরে তাঁর লালারস নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল ঘাটালে। সেই মহকুমায় এখন প্রতিদিনই দু’-চারজন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। শুক্রবারের চার জনকে ধরলে মহকুমায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬। এঁদের মধ্যে তিন জনের বাড়ি দাসপুরে পৃথক গ্রামে। অন্য জনের বাড়ি চন্দ্রকোনার গ্রামে। দাসপুরে যে যুবকের মৃত্যুর পরে করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে, তিনিও পরিযায়ী শ্রমিক। পেশায় সোনার কারিগর এই যুবক গত ২১ মে কানপুর থেকে দিল্লি হয়ে দাসপুরে ফেরেন। তারপর বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন। গত ২ মে তাঁর শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথমে তাঁকে ঘাটাল শহরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন সন্ধ্যায় ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর রাতেই পাঠানো হয় মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে। তবে চিকিৎসার শুরুর আগেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। মৃত্যুর পরে করোনা হাসপাতাল থেকে তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।
দাসপুরের নতুন তিন করোনা আক্রান্তের দু’জন ৩১ মে মহারাষ্ট্র থেকে এসেছিলেন। অন্য একজন ২২ মে দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন। দাসপুরের আক্রান্ত তিনজনই মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রাতেই তাঁদের পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য দিকে, চন্দ্রকোনার করোনা আক্রান্ত যুবক ২২ মে হায়দরাবাদ থেকে ট্রাকে চেপে ক্ষীরপাইয়ে আসেন। বাড়ি লাগোয়া তাঁবুতে আলাদা থাকছিলেন। গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁর লালারস নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে তাঁকেও বড়মায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাটাল মহকুমায় আক্রান্ত চার জনের বাড়ির এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সরাসরি সংস্পর্শে আসা মোট ২৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর মৃত যুবকের সূত্রে ঘাটাল শহরের একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। সেখানকার কর্মীদেরও হোম কোয়ারান্টিন করা হয়েছে।
গড়বেতাতেও তিন পরিযায়ী শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে গত দু’দিনে গড়বেতায় ৪ জনের শরীরে মিলল মারণ ভাইরাসের হদিশ। প্রত্যেকেই খড়কুশমা এলাকার বাসিন্দা, ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিক। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসে গড়বেতা ১ ব্লক প্রশাসন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে খড়কুশমা এলাকার ৩ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। আক্রান্ত ৩ জনকেই পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাড়ির লোকেদের গৃহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, তাঁদেরও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। বুধবার রাতে খড়কুশমা অঞ্চলের তালড্যাংরা এলাকায় একজন ১৭ বছরের নাবালক পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা আক্রান্তের খবর মেলে। সে গুজরাতের সুরাত থেকে ফিরেছিলেন। তারপরে সেই খড়কুশমা থেকেই এল আরও তিন আক্রান্তের খবর। তিন জনই দিল্লিতে কাজ করতেন। এঁদেরও একজন নাবালক, বয়স ১৬ বছর। একই সঙ্গে সকলে ২৩ মে ফিরেছিলেন। তাঁদের সূত্রে খড়কুশমার তিনটি এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করে ‘সিল’ করা হয়েছে। গড়বেতা ১-এর বিডিও শেখ ওয়াসিম রেজা ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘আতঙ্কের কিছু নেই। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের করোনা বিধি মানতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy