প্রতীকী ছবি
অ্যাম্বুল্যান্স চালক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে দু’টি বিষয় জানার চেষ্টা চলছিল। প্রথমত, তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছেন। দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতি কালে ঠিক কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন ঘাটালের ওই যুবক। সেই সন্ধানেই সামনে এসেছে ভিন্ রাজ্য যোগ। জানা যাচ্ছে, বীরভূমের রামপুরহাটেও শ্রমিকদের পৌঁছে দিয়ে এসেছিলেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক।
স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, ওই চালক থেকে অনেকেই করোনা সংক্রমিত হতে পারেন। সেই মতো তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনের তালিকায় কারা থাকতে পারেন, আক্রান্ত ব্যক্তি কোন পথে কোথায় গিয়েছিলেন—প্রথম থেকেই তার খোঁজ শুরু করেছিল পুলিশ। সেই সূত্রেই সামনে এসেছে বিহার ও বীরভূমে যোগ। ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে গৃহ পর্যবেক্ষণ (হোম কোয়রান্টিন) বা নিভতবাস কেন্দ্রে (কোয়ারান্টিন সেন্টার) রাখার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের সূত্রে রবিবার পর্যন্ত মোট ৪৫ জনকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। গৃহ পযবেক্ষণে রয়েছেন আরও ৬০ জন। তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে।
খোঁজখবর করতে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, করোনা আক্রান্ত অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিহারের পটনায় গিয়েছিলেন। এপ্রিল মাসেই তিনি ঘাটাল থেকে বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে প্রথমে বীরভূমের রামপুরহাটে গিয়েছিলেন। সেখানে শ্রমিকদের নামিয়ে পটনা রওনা দেন। সেখান থেকে আরও কয়েকজন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিককে নিয়ে ঘাটাল, দাসপুরে আসেন। শুধু তাই নয়, এই পর্বে ওই চালক একাধিক বার কলকাতাও গিয়েছিলেন। শুধু রোগী নয়, শ্রমিকদেরও কলকাতা থেকে পৌঁছে দিয়েছিলেন দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। ওই যুবকের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে পুলিশ জেনেছে, মার্চ মাসের ২৭ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে রামপুরহাট ও পটনা গিয়েছিলেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক। কলকাতা গিয়েছিলেন এপ্রিলেই।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে লকডাউন চলাকালীন যেখানে মোড়ে মোড়ে পুলিশের নাকা-তল্লাশি চলছে, সেখানে এই অ্যাম্বুল্যান্স চালক ভিন্ জেলা, এমনকি ভিন্ রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বারবার যাতায়াত করলেন কী ভাবে! পুলিশের নজরদারিতে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীর বদলে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াতের বিষয়টিই বা ধরা পড়ল না কেন?
পুলিশের এক সূত্র মানছে, অ্যাম্বুল্যান্স বলে খুঁটিনাটি পরিদর্শন অনেক ক্ষেত্রেই হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্সে কী ভাবে শ্রমিকদের আনা হচ্ছিল, তা প্রশাসনিক স্তরে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’ ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী জানিয়েছেন, বিহার থেকে কোন রুটে ঘাটালে ঢুকেছিলেন ওই চালক, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে।
অ্যাম্বু্ল্যান্স চালকদের একাংশের বক্তব্য, মোটা টাকার বিনিময়েই এই যাতায়াত চলেছে। সর্বাধিক দেড় লক্ষ এবং সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকা ভাড়ায় শ্রমিকদের আনা-নেওয়া চলছে। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি, অর্থাৎ লকডাউনের গোটা সময়টা ধরেই নিয়ম করে শ্রমিকেরা ঘাটালে ফিরেছেন। এ ক্ষেত্রে বড় অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হত। কখনও দু’জন করে চালকও থাকতেন। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রোগী সাজিয়েই পরিযায়ী শ্রমিকদের আনা-নেওয়া চলত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy