নিভৃতবাস কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
একই চত্বরে মুখোমুখি দুই স্কুল। একটি প্রাথমিক, অন্যটি জুনিয়ার হাইস্কুল। করোনা সতর্কতায় দুই স্কুলেই এখন ছুটি চলছে। তবে পড়ুয়া-শিক্ষকদের আনাগোনা না থাকলেও ফাঁকা নেই দুই স্কুল ভবন। সেখানেই এখন নিভৃতবাসে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
সরকারি ভাবে ওই সব নিভৃতাবাস কেন্দ্রের দেখাশোনা করার কথা। কিন্তু নন্দকুমারের পুয়্যাদা বাজারের সংলগ্ন পুয়্যাদা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়র হাইস্কুল ভবনে থাকা ন’জন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কারও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। নিভৃতাবাসে থাকা ওই শ্রমিকদের সরকারিভাবে খাবার দেওয়া হয় না। ফলে নিজেদের বাড়ি থেকে প্রতিদিন দুই বেলা খাবার পৌঁছে দিতে হয়। আর দিল্লি থেকে ফেরা দু’জন কিশোর-সহ চার জন পরিযায়ী শ্রমিকের এখনও করোনা পরীক্ষার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার ওই নিভৃতাবাস কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, প্রাচীর ঘেরা স্কুলে ‘আমপান’ ঝড়ে ভেঙে যাওয়া গাছের গুঁড়ি কেটে ডাঁই করে রাখা রয়েছে। স্কুল ভবনের বাইরে গাছতলায় বসে রয়েছেন অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক। প্রায় কারও মুখেই মাস্ক নেই। তামিলনাড়ু থেকে এসে সপ্তাহ খানেক আগে এখানে রয়েছেন শেখ আমজাদ, মঙ্গল সামন্ত, তপন সামন্তেরা। প্রাথমিক স্কুল ভবনে রয়েছেন দুই কিশোর। আর জুনিয়র হাইস্কুলের ভবনে রয়েছেন ৭ জন। আমজাদের অভিযোগ, ‘‘তুতিকোরিনে ঝালাইয়ের কাজ করতাম। লকডাউনে ফিরে এসেছি। সাতদিন ধরে এই স্কুল ভবনে রয়েছি। আলো, জল, পাখা, শৌচাগারের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। তবে গত সাত দিনে একবারও স্কুলের চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। প্রশাসনের তরফে আমাদের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। মাঝে মধ্যে এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে খোঁজ
নিয়ে যান।’’
দিল্লি ফেতর দুই কিশোরের কথায়, ‘‘দিল্লিতে সোনার কাজ করতাম। দোকান মালিক আমাদের বাসে করে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তারপর ১২ দিন ধরে এখানে এসেছি। এখনও লালারসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি।’’ ওই দুই কিশোরের মা সুমিত্রা মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসন তো খাবার দিলই না। তার উপরে ১২ দিন পার হলেও এখনও নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। ওদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’
নিভৃতবাস কেন্দ্রে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন অভিযোগ নিয়ে নন্দকুমারের বিডিও মহম্মদ আবু তায়েব বলেন, ‘‘নিভৃতবাস কেন্দ্রে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের খাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে। তবে খাবার দেওয়া না গেলেও তাঁর পরিবর্তে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে কি হয়েছে খোঁজ নেওয়া হবে।’’
লালারসের নমুনা পরীক্ষা প্রসঙ্গে বিডিও বলেন, ‘‘যাঁদের করোনা উপসর্গ রয়েছে তাঁদেরই নমুনা পরীক্ষা করার বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা এসেছে। তবে নিভৃতাবাসে থাকা শ্রমিকদের নিয়মিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত খোঁজ রাখছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy