এই অ্যাম্বুল্যান্সে করেই আক্রান্তকে বেলেঘাটা আইডি নিয়ে যাওয়া হয় ।
রাজ্যের করোনা আক্রান্তদের মানচিত্রে এ বার জুড়ল দাসপুর। সেখানকার এক যুবকের লালারসে করোনা পজিটিভ মিলেছে।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ওই যুবক। তবে তাঁর গতিবিধিতে ঘুম উড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। তাঁদের মতে, যুবকদের গতিবিধি থেকেই স্পষ্ট, ভিন রাজ্য থেকে ফিরে নিয়মের তোয়াক্কা করেননি তিনি। বয়স্ক বাবা-মা, স্ত্রীর সঙ্গে থেকেছেন একসঙ্গে। ঘুরে বেড়িয়েছেন যথেচ্ছ। পরিস্থিতি বুঝে ওই যুবকের বাবাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। আর কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন তিনি খোঁজ চলছে তাঁদের।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই যুবককে বেলেঘাটা আইডিতে পাঠানো হয়েছে। ওঁর বাবাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালের আইসোলেশনে ভর্তি রাখা হয়েছে। দাসপুরের ওই গ্রামটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। যুবকের মা, স্ত্রী- সহ সংস্পর্শে আসা মোট ছ’জনকে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর তেইশের ওই যুবক মুম্বইয়ে সোনার কাজ করতেন। গত ২২ মার্চ মুম্বই থেকে মুম্বই-শালিমার কুরলা এক্সপ্রেসে (জেনারেল কামরা) করে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নামেন ওই যুবক। তাঁর সঙ্গে মুম্বই থেকে এসেছিলেন আরও কয়েকজন যুবক। তবে ট্রেনে প্রত্যেকেই ছিলেন আলাদা কামরায়। স্টেশনে নেমেই ওই যুবক যান পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি বিভাগের জরুরি বিভাগে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে আলাদা ঘরে বন্দি থাকার পরামর্শ দেন। মারুতি ভাড়া করে বাড়ি ফেরেন ওই যুবক। কিন্তু অভিযোগ, বাড়ি ফিরেই ভুলে যান চিকিৎসকদের পরামর্শ। আলাদা ঘরে তো থাকেননি। উল্টে বাবা, মা, স্ত্রীয়ের সঙ্গে ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেননি বলে অভিযোগ। ছেলে বাড়ি ফিরেছে। ফলে যুবকের জেঠু ও তাঁর পরিবারের কয়েকজনও দিব্যি এসে গল্পগুজব করেছেন ওই যুবকের সঙ্গে। ফলে জেঠু-সহ কয়েকজন আপাতত রয়েছেন কোয়রান্টিনে।
২৪ মার্চ বাড়িতে জ্বর আসে যুবকের। ২৮ মার্চ পাঠানো হয় দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ঘুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। ৩০ মার্চ লালারস পরীক্ষা হয়।
নিয়মভঙ্গ শুধু বাড়িতেই নয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই যুবক নাকি বাড়ি ফিরে মোটরসাইকেল করে ঘুরে বেড়িয়েছেন এ পাড়া, ওপাড়া। একে ট্রেনে জেনারেল কামরায় সফর। তার উপর নিয়ম ভেঙে ঘুরে বেড়ানো। এ সবেই চিন্তা বাড়ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। প্রশাসন জানিয়েছে, এই ক’দিনে স্থানীয় বাজার, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় তাঁরা ঠিক কতজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তার খোঁজখবর চলছে।পাশাপাশি দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতাল ও ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন, তাঁদেরও নজরে রাখা হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স চালককেও নজরে রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে, মারুতির দুই সঙ্গী এবং গাড়ির চালকের।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, দাসপুরের যুবক যে বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে ট্রেনে উঠেছিলেন, তাঁদের শনাক্ত করে হোম কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে ওই যুবকের ট্রেন যাত্রার সবিস্তার তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে খড়্গপুর রেল বিভাগ। ওই যুবক যে কামরার যাত্রী ছিলেন তার তালিকা ধরে সহযাত্রীদের চিহ্নিতের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। তবে যাত্রীদের সম্পূর্ণ তালিকা খড়্গপুরের মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরীর হাতে তুলে দেবে রেল বিভাগ। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাবতীয় তথ্য খড়্গপুরের মহকুমা শাসকের হাতে তুলে দেব।” নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy