প্রতীকী ছবি।
২০২০ সালের এপ্রিল। রেলশহরের ৯জন আরপিএফ জওয়ানের হাত ধরে জেলায় ছড়িয়েছিল করোনা। তারপর দু’বচ্ছর চলে সংক্রমণ। দিন চোদ্দ আগে করোনা মুক্ত হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর। এর পরে মধ্যে একজনও করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলেনি।
তবে বড়দিনেই ফের দুঃসংবাদ। জেলায় ফের দু’জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলল রেলশহর খড়্গপুরেই। তার মধ্যে এক বৃদ্ধা আবার করোনার কোনও টিকাই নেননি।
শনিবার রাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে আসা রিপোর্টে জানা যায়, জেলায় দু’জন মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এবং দু’জনেই খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা ও রেল পরিবারের সদস্য। করোনা সংক্রমণ নিয়ে নতুন করে সতর্কবার্তা জারি করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বর্ষশেষে সেই আবহে রেলশহরের দু’জন সংক্রমিত হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের। ব স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্তদের একজনের বাড়ি খড়্গপুর শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চ রোডে। অন্যজন থাকেন ৬নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর কালীমন্দির এলাকায়। দু’জনেই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “আমাদের জেলা গত ১৪দিন করোনা মুক্ত ছিল। এই নতুন ঢেউয়ে প্রথম দু’জন করোনা পজ়িটিভ বলে জানা গেল। দু’জনই খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। তাঁদের পরিবারের সব সদস্যের করোনা পরীক্ষার বন্দোবস্ত করছি। পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছি।”
মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরে রেল সূত্রে বিভিন্ন প্রদেশের বাসিন্দাদের যাতায়াত রয়েছে। তাই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। আপাতত চিন, মালয়েশিয়া, ব্যাংকক-সহ কয়েকটি জায়গা থেকে কেউ এলেই তাঁকে নিভৃতবাসে রেখে করোনা পরীক্ষা করা হবে। তবে আক্রান্ত দুই মহিলার বাইরে যাতায়াতের কোনও তথ্য মেলেনি। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ফাইলেরিয়ায় আক্রান্ত মালঞ্চর বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধা এখনও করোনার কোনও টিকা নেননি।
গত সোমবার রেল হাসপাতালে ভর্তির পরেই করোনা পরীক্ষা হয় বৃদ্ধার। জানা যায় তিনি সংক্রমিত। বৃদ্ধার দেওর বলেন, “বৌদি পেনশনভোগী। গত বছর থেকেই অসুস্থ। সেই জটিলতায় আর টিকা নেওয়া হয়নি। ফাইলেরিয়ার জন্যই রেল হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। তার পরেও তো ঠিকই ছিল। আমাদের ধারণা রেল হাসপাতাল থেকেই সংক্রমিত হয়েছেন।” তবে খড়্গপুর রেলের প্রধান হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট রাজেন্দ্রকুমার বেহেরা বলছেন, “কোনও রোগী ভর্তি হতে এলেই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করছি। আর উপসর্গ থাকলে আরটিপিসি করা হচ্ছে। সে ভাবেই এই বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। আমাদের কোভিড ওয়ার্ড বন্ধ করিনি। সেখানেই ওঁকে ভর্তি রাখা হয়েছে।”
৬নম্বর ওয়ার্ডের সংক্রমিত প্রৌঢ়া আবার ব্লাড ক্যান্সারের রোগী। আগেও দু’বার তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে কোমরের সমস্যার জেরে কলকাতার একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন পরিজনেরা। সেখানেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তবে ওই প্রৌঢ়ার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী বলেন, “আমার স্ত্রী করোনা টিকার দু’টি ডোজ় নিয়েছিলেন। তার পরেও তৃতীয়বার আক্রান্ত হলেন।”
এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে জেলায় ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল ও ঘাটালে করোনা চিকিৎসার বিশেষ ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার চারটি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর বলেন, “আমরা করোনা রুখতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে সমস্ত কাজ করছি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো চালু রাখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy