Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

জোটের হার নিজের ওয়ার্ডেও

রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল, বিজেপির ভোটে ভাগ বসাবে কংগ্রেস। আর সেই অঙ্কে এগিয়ে যাবে তৃণমূল। কিন্তু যে ভাবে বিজেপির ভোটে জোট ভাগ বসাবে বলে মনে করা হচ্ছিল তা হয়নি। বরং বিজেপির ভোটে বড়সড় থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলে তা স্পষ্ট। 

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share: Save:

লোকসভায় ছিল একক লড়াই। ভোট গিয়েছিল বিজেপির ঘরে।

বিধানসভা উপ-নির্বাচনে অবশ্য জোট বেঁধেছিল বাম-কংগ্রেস। তবে সেই জোট তেমন দাগ কাটতে পারেনি রেলশহরে। গত লোকসভায় বাম-কংগ্রেসের আলাদা আলাদা ভাবে প্রাপ্ত ভোটের যোগফলের তুলনায় এ বার জোট প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল ভোট বেশি পেলেও নিজেদের দখলে থাকা ওয়ার্ডেই পিছিয়ে পড়েছে বাম ও কংগ্রেস।

খড়্গপুর সদর (শহর) বিধানসভা উপ-নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত লোকসভায় বাম-কংগ্রেস আলাদা লড়ে ১৬ হাজারের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিল। এ বার জোট প্রার্থী পেয়েছেন ২২ হাজারের বেশি ভোট। তবে কংগ্রেসের দখলে থাকা ৬টি ও বামেদের দখলে থাকা একটি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪টিতেই পিছিয়ে পড়েছে জোট। গত লোকসভাতেও ওই ৪টি ওয়ার্ডে লিড পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে এ বার ৩টি ওয়ার্ডে লিড পেয়েছে তৃণমূল। তবে এর পাশাপাশি গত লোকসভায় একটি ওয়ার্ডেও লিড না পাওয়া কংগ্রেস উপ-নির্বাচনে নিজেদের দখলে থাকা তিনটি ওয়ার্ডে ‘লিড’ পাওয়ার পরিসংখ্যান সামনে আনছে। কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষ বলেন, “আমরা তিনটি ওয়ার্ডে জিতেছি। লোকসভায় তো একটি ওয়ার্ডেও জিততে পারিনি।’’ তবে তিনি মানছেন, ‘‘এ বার জোটের পরেও যেভাবে আমাদের ৩টি ওয়ার্ড ও সিপিএমের ১টি ওয়ার্ডে জিততে পারিনি তাতে বুঝেছি জোট প্রভাব ফেলেনি। এনআরসি প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রভাব ফেলেছে।”

রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল, বিজেপির ভোটে ভাগ বসাবে কংগ্রেস। আর সেই অঙ্কে এগিয়ে যাবে তৃণমূল। কিন্তু যে ভাবে বিজেপির ভোটে জোট ভাগ বসাবে বলে মনে করা হচ্ছিল তা হয়নি। বরং বিজেপির ভোটে বড়সড় থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলে তা স্পষ্ট।

কংগ্রেসের দখলে থাকা ২২ নম্বর ওয়ার্ডে গত লোকসভায় ৬৫৫টি ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। এ বার জোট সেখানে ৯১৪টি ভোট পেয়েছে। বাড়তি ২৫৯টি ভোট যে বামেদের সৌজন্যে এসেছে তা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু গত লোকসভায় ২৯১৫টি ভোট পাওয়া বিজেপি এ বার পেয়েছে ১৫৪০টি ভোট। আর লোকসভায় ১১৩২টি ভোট পাওয়া তৃণমূল এ বার বিজেপির ভোটে ভাগ বসিয়ে ১৮৯১টি ভোট পেয়েছে। একই ভাবে কংগ্রেসের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে লোকসভায় ৮৯১টি ভোট পাওয়া কংগ্রেস এ বার ৮৯৮টি ভোট পেয়েছে। আর ৭৯৭টি ভোট পাওয়া তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে ২৪৬২টি ভোট। ১৯৩৩টি ভোট কমেছে বিজেপির।

শহরের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে পরিচিত বিশ্বজিৎ কর বলেন, “জোট যে প্রভাব ফেলতে পারেনি তা ভোটের ফলে প্রমাণিত। বরং ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় বিজেপির ভোটের ভাগ পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। তাই আগামী পুরভোটে কংগ্রেস-বাম শহরে কী ভাবে লড়াই করে সেটা দেখার।”

খোদ মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী রীতা শর্মা নিজের ১৪নম্বর ওয়ার্ডেই লিড পেয়েছে বিজেপির। আবার সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য স্মৃতিকণা দেবনাথের দখলে থাকা ৩৩নম্বর ওয়ার্ডেও পিছিয়ে পড়েছে জোট। স্মৃতিকণাও বলছেন, “আসলে এই নির্বাচনে এনআরসি প্রভাব ফেলেছে। সেখানে আমাদের জোট প্রভাব ফেলতে পারেনি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির খোঁচা, “কংগ্রেস ও বাম, দু’টি দলের অস্তিত্ব রাজ্যে ধ্বংস হয়েছে। অস্তিত্ব হারানো দুই দলের কাউন্সিলরেরা চাইলে আমাদের দলে আসতে পারেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Congress CPIM Kharagpur By Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy