Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্রী ভর্তি নিয়ে দুই স্কুলের টানাপড়েন

সবংয়ে এমন ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়েছে বসন্তপুর ঝাড়েশ্বর বাণীভবন। এই স্কুলে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। এলাকার মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের পঠনপাঠনের জন্য রয়েছে উচিতপুর সুশীলাকন্যা বালিকা বিদ্যালয়।

 বসন্তপুরের স্কুল। নিজস্ব চিত্র

বসন্তপুরের স্কুল। নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
সবং শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৭
Share: Save:

পরিকাঠামোর অভাবে গত কয়েকবছরে ছাত্রী ভর্তির সংখ্যা কমেছে পাশের বালিকা বিদ্যালয়ে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের স্কুলে ছাত্রী ভর্তি করতে শিক্ষা দফতরে অনুমতি চেয়েছিলেন সবংয়ের বসন্তপুর ঝাড়েশ্বর বাণীভবনের প্রধান শিক্ষক। শেষমেশ অবশ্য বালিকা বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বুঝে অনুমতি দেননি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক।

সবংয়ে এমন ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়েছে বসন্তপুর ঝাড়েশ্বর বাণীভবন। এই স্কুলে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। এলাকার মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের পঠনপাঠনের জন্য রয়েছে উচিতপুর সুশীলাকন্যা বালিকা বিদ্যালয়। দু’টি স্কুলের দূরত্ব মেরেকেটে ৫০মিটার। পরিকাঠামোর অভাবে কয়েক বছর ধরে ছাত্রী ভর্তি কমে গিয়েছিল এই বালিকা বিদ্যালয়ে। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন এই বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে গত নভেম্বরে ঝাড়েশ্বর বাণীভবনের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ মণ্ডল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে আবেদন করেন। তাতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের পড়াশোনা চালুর অনুমতি চাওয়া হয়। একইসঙ্গে স্কুল শিক্ষা দফতর সেই অনুমতি দেবে ধরে নিয়ে ছাত্রী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করে। গত ২৬ ডিসেম্বর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান, ওই স্কুলে ছাত্রী ভর্তি করা যাবে না। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দার বলেন, “দু’কিলোমিটারের বেশি না হলে এমন অনুমতি দেওয়া যায় না। ঝাড়েশ্বর বাণীভবনের পাশেই আরেকটি বালিকা বিদ্যালয়। বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রী ভর্তির সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কাতেই আমরা অনুমতি দিইনি।”

বসে নেই ঝাড়েশ্বর বাণীভবনের কর্তৃপক্ষ। নতুন করে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুল শিক্ষা দফতরের উপ-অধিকর্তার (সাধারণ) কাছে ছাত্রী ভর্তির অনুমতি পুনর্নবীকরণের অনুমতি চেয়েছেন। তাঁর দাবি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ছাত্রী ভর্তির আবেদন নাকচের পরে তিনি জানতে পারেন এই স্কুলে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রী ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তার পরে অনুমতি পুনর্নবীকরণ হয়নি। তাই এ বার ছাত্রী ভর্তি পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। সুশীলাকন্যা বালিকা বিদ্যালয়ের টিচার ইন-চার্জ চন্দনা চক্রবর্তী বলেন, “আমি গত জুলাইয়ে দায়িত্ব নিয়েছি। আমার আগে যিনি প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন তাঁর সময়ে স্কুল পিছিয়ে পড়েছিল। আমরা নতুন করে স্কুলের মানোন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছি। তার মানে এই নয় দুর্বলতার সুযোগে পাশের স্কুল ছাত্রীদের কেড়ে নেবে!” ঝাড়েশ্বর বাণীভবনের প্রধান শিক্ষক আশুতোষের বক্তব্য, “পাশের বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রী কমছে। এলাকার ছাত্রীরা দূরের স্কুলে চলে যাচ্ছে। ছাত্রীদের সুবিধার্থে আমরা ছাত্রী ভর্তির অনুমতি পুনর্নবীকরণ করতে চাইছি।”

গত নভেম্বরে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে করা আবেদনে সম্মতি জানিয়েছিলেন বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া। অবশ্য এখন গীতা বলছেন, “প্রধান শিক্ষক আশুতোষ মণ্ডল স্কুল উন্নয়নের কথা বলে বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে একটি কাগজে সই করে নিয়েছিলেন। এখন বুঝেছি ওটা ছাত্রী ভর্তির সম্মতিপত্র। আমি চাই না বালিকা বিদ্যালয়কে ধ্বংসের পথে ঠেলে ঝাড়েশ্বর বাণীভবনে ছাত্রী ভর্তি হোক।” আশুতোষ বলছেন, “এভাবে কী একজন বিধায়ককে ভুল বুঝিয়ে সই করানো যায়!” ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “এত বছর বসন্তপুর ঝাড়েশ্বর বাণীভবণ যেভাবে চলছে সে ভাবে চলুক।”

অন্য বিষয়গুলি:

Sabang School Admission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy